ইউক্রেন বৃহস্পতিবার রাশিয়ার একটি কৌশলগত বোমারু বিমানঘাঁটিতে ড্রোন দিয়ে আঘাত হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় যুদ্ধের সম্মুখ সারির প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে বিশাল বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

রয়টার্সের যাচাইকৃত ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, বিমানঘাঁটি থেকে একটি বিশাল বিস্ফোরণ ছড়িয়ে পড়ে, যা কাছাকাছি কটেজগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। 

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ান অঞ্চলের উপর দিয়ে ১৩২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

অন্যান্য যাচাইকৃত ভিডিওতে ভোরের আকাশে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং তীব্র আগুন দেখা গেছে।

সোভিয়েত আমলের এঙ্গেলস ঘাঁটিতে রাশিয়ার টুপোলেভ টিইউ-১৬০ পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ভারী কৌশলগত বোমারু বিমান রয়েছে, যা অনানুষ্ঠানিকভাবে হোয়াইট সোয়ান নামে পরিচিত।

সারাতোভের গভর্নর রোমান বুসারগিন জানিয়েছেন, এঙ্গেলস শহরে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার ফলে একটি বিমানঘাঁটিতে আগুন লেগেছে এবং আশেপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি নির্দিষ্টভাবে এঙ্গেলস ঘাঁটির কথা উল্লেখ করেননি, তবে এটি এই এলাকার প্রধান বিমানঘাঁটি।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে এবং দ্বিতীয় দফায় গোলাবারুদের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় ১০ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না

বিশ্বরাজনীতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একটি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ইস্যু। পশ্চিমা শক্তিগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান নাকি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বা যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আজ পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি, যা এ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করে। অন্যদিকে ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

প্রশ্ন হলো, যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইত, তাহলে গত দুই দশকে তা তৈরি করেনি কেন? আর যদি তা না-ই চায়, তাহলে উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে হলে ইরানের ধর্মীয় অবস্থান, কৌশলগত চিন্তা, রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির দ্বিচারিতা একত্রে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আরও পড়ুনইরান এবার বড় যুদ্ধের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হবে০৬ জুলাই ২০২৫ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ও নৈতিক অবস্থান

২০০৩ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ঐতিহাসিক ফতোয়া জারি করেন। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, মজুত কিংবা ব্যবহার ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম।’ এ সিদ্ধান্ত শুধুই ধর্মীয় নয়, বরং একটি নৈতিক অবস্থানও, যেখানে নিরীহ মানুষ হত্যাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পারমাণবিক বোমা শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে না, বরং শহর, জনপদ ও লাখ লাখ নিরীহ মানুষের প্রাণ হরণ করে। ইসলামের যুদ্ধনীতিতে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

ইরান মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুধু মানবতার বিরুদ্ধে নয়, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিরুদ্ধে চরম অন্যায়। হিরোশিমা-নাগাসাকির দৃষ্টান্ত এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ দেয়।

কৌশলগত ও সামরিক বাস্তবতা

অনেকের ধারণা, পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই একটি দেশ নিরাপদ থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলেও ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য হয়। উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে। এমনকি রাশিয়া, যাদের বিশ্বের সর্বোচ্চ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সঙ্গে কৌশলগতভাবে চাপে পড়েছে। ইসরায়েলও অঘোষিত পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়া সত্ত্বেও ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’-এ বড় ধরনের সামরিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

এ বাস্তবতা ইরানকে বুঝিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র নয়, কার্যকর প্রতিরোধক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তাই তারা শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন এবং কৌশলগত অস্ত্র নির্মাণে জোর দিয়েছে।

সামরিক মহড়া চলাকালে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের অজ্ঞাত স্থান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ছবিটি প্রকাশ করে ইরান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশে জোর সেনাপ্রধানের
  • ইরান যে তিন কারণে পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না