মদ্রিচের সামনে মুখ থুবড়ে পড়লেন এমবাপে
Published: 21st, March 2025 GMT
এবারের উয়েফা ন্যাশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র যখন হয়, তখন ধারণা ছিল একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে ক্রোয়শিয়া-ফ্রান্স ম্যাচে। সেই ধারণা সত্য করে গোটা ম্যাচেই ছড়াল উত্তাপ। এই মহারণে লুকা মদ্রিচ তার রিয়াল মাদ্রিদের সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে ছুঁড়েন কথার তীর।
ম্যাচে ৩৯ বছরের মদ্রিচের সামনে রীতিমত মুখ থুবড়ে পড়লেন ২৬ বছর বয়সী এমবাপে। অন্যদিকে ভাগ্য সহায় হচ্ছিল না ফ্রান্স দলের। বহু আক্রমণের পরও গোলের দেখা পায়নি তারা। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে ন্যাশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ফ্রান্সকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়শিয়ে। ফলে সেমি ফাইনালের পথে এক পা দিয়েই রেখেছে মদ্রিচরা।
ফ্রান্স তখন দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভেদ করতে সংগ্রাম করছিল ফরাসিরা। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মদ্রিচ তার ক্লাব সতীর্থ এমবাপেকে উতক্ত কিছু কথা বলেন। ঘটনা হচ্ছে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকা যান এমবাপে। পেছন থেকে তাকে পাহাড়া দিচ্ছিলেন মদ্রিচ। এই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গিয়ে পেনাল্টি দাবি করেন ফরাসি তারকা।
আরো পড়ুন:
বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের প্রতিশোধ নিল ক্রোয়শিয়া
ইউক্রেনে এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ফ্রান্স-যুক্তরাজ্যের
এই নাটকীয় ডাইভের পর মদ্রিচ চিৎকার করে কিছু বলেন। স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছিল ফরাসি ফরোয়ার্ডকে ডাইভ করা বন্ধ করার জন্য বলছিলেন। যদিও বন্ধুত্ব এবং রসিকতা ছিল মদ্রিচের কথায়। তবে একই সাথে ন্যাশনস লিগের নক আউটের উত্তেজনার প্রতিফলনও ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে, এমবাপে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন। প্রাচীর হয়ে ক্রোয়েট গোলরক্ষক সেটি সেভ করেন। এই ২৬ বছর বয়সী ফরাসি সুপারস্টার চারটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করে সবগুলোই শুট করেছিলেন। তবে জালের দেখা পাননি।
ম্যাচের ৮৮ মিনিটে, এমবাপে বক্সের মধ্যে পড়ে গেলে, সহানুভূতির পরিবর্তে তাকে কঠিন কথা শুনান মদ্রিচ। তাকে উঠে দাঁড়ানোর জন্য বলেন।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ক ল য় ন এমব প প মদ র চ ফ ইন ল এমব প
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে একের পর এক অঘোষিত ভাগাড়, বর্জ্য ফেলে পরিবেশদূষণ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়াতলী এলাকা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই এলাকায় গেলে দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে চোখে পড়ে সারি সারি ময়লার স্তূপ। মহাসড়কের পাশ যেন হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে।
শুধু হাড়াতলী এলাকাই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে এমন অঘোষিত ভাগাড় গড়ে উঠেছে। মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার অংশ। এর মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে তাদের সংগ্রহ করা ময়লা ফেলছে। এতে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তে, মহাসড়ক পরিণত হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে। এভাবে পরিবেশদূষণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজটা কী? মানুষ তো ট্যাক্স দেয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা একধরনের অপরাধও। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার।
হাড়াতলী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে স্থানটিতে ময়লা ফেলা শুরু করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এরপর সেটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় ভাগাড়ে। দিন যত গেছে, ময়লা ফেলার জায়গাটির আকার ততই দীর্ঘ হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে হেঁটে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের বসবাসকারীরা। ভাগাড়ের আশপাশে অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল।
এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে।মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব, উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লাস্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা ফেলতে আমরা বারবার বাধা দিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিটি করপোরেশন সবুজে ঘেরা এলাকাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখনো প্রতিদিন ময়লা বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলে, তারা নাকি এখন ময়লা ফেলে না। তাহলে আমাদের প্রশ্ন, ময়লা কারা ফেলছে?’
স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে বসা যায় না দুর্গন্ধের জন্য। একটু বাতাসেই নাকে ভেসে আসে ময়লার দুর্গন্ধ। কলেজে প্রবেশের সময় নাক চেপে ধরে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাড়াতলীতে তিন মাস ধরে তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন না। সিটি করপোরেশনের ফেলা ময়লাগুলো ভেকু দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন রাতের আঁধারে আশপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছে। যারা ময়লা ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রবেশমুখ বালুজুড়ি এলাকায় ময়লার ভাগাড়