আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিল দলে ছিটকে গেছেন যারা
Published: 23rd, March 2025 GMT
লিওনেল মেসি, পাওলো দিবালা, লাওতারো মার্তিনেজসহ সেরা একাদশের ছয়জন নেই আর্জেন্টিনা দলে। একই অবস্থা ব্রাজিলেরও। নেইমার তো আগেই ছিটকে গেছেন, কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচে ব্রাজিলের আরও চারজন চোটে পড়েছেন। ফলে আগামী বুধবার বুয়েন্স আইয়ার্সে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল লড়াইয়ে দু’দলের সেরা একাদশের মোট ১১ জনকে দেখা যাবে না।
আর্জেন্টিনা ম্যাচ সামনে রেখে স্কোয়াডে চারটি পরিবর্তন এনেছেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। তাঁর জায়গায় ডাকা হয়েছে ওয়েভেরতনকে। কার্ডের খাড়ায় পড়ায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পাওয়া যাবে না সেন্টারব্যাক গ্যাব্রিয়েল মাগালহাস এবং মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারেসকে। দু’জনই এক ম্যাচ করে নিষিদ্ধ। তাদের জায়গায় পিএসজি ডিফেন্ডার বেরালদো ও উলভস মিডফিল্ডার হোয়াও গোমেজকে ডেকেছেন ব্রাজিল কোচ। এছাড়া কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বাঁ ঊরুতে চোট পাওয়া মিডফিল্ডার গারসনও ছিটকে গেছেন। তাঁর বদলে আটালান্টার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এদেরসনকে ডাকা হয়েছে।
চোট পাওয়া এই চারজনের মধ্যে ব্রাজিল চিন্তিত মূলত গোলকিপার নিয়ে। গত আট বছর ধরে ব্রাজিলের গোলপোস্ট সামলান বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই গোলরক্ষক অ্যালিসন বা এডারসন। কলম্বিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গত চার ম্যাচে গোলপোস্টের নিচে ছিলেন ম্যানসিটির গোলকিপার এডারসন। তিনি চোটে পড়ায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পান লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন। কলম্বিয়ার বিপক্ষে অ্যালিসন চোট পেয়ে ৭৮ মিনিটে উঠে গেলে বাকি সময়টা পোস্টের নিচে ছিলেন বেন্তো।
তবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আগামী ম্যাচে অভিজ্ঞতার বিচারে ওয়েভেরতনের সেরা একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। ২০১৬ সালে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের হয়ে ১০টি ম্যাচ খেলেছেন পালমেইরার্সের এ গোলরক্ষক। আর্সেনাল ডিফেন্ডার মাগালহাস ও নিউক্যাসল মিডফিল্ডার গুইমারেসের অনুপস্থিতিও ভোগাতে পারে ব্রাজিলকে। প্রিমিয়ার লিগে খেলা দু’জনই বর্তমানে নিজের পজিশনে অন্যতম সেরা।
আর্জেন্টিনা অবশ্য মেসি-দিবালাদের অভাব উরুগুয়ের বিপক্ষে খুব বেশি অনুভব করেনি। জুলিয়ান আলভারেজ, থিয়াগো আলমেইদা, গিউলিয়ানো সিমন্স, নিকো গঞ্জালেসরা আক্রমণভাগ ভালোই সামলেছেন। তবে উরুগুয়ের বিপক্ষে লাল কার্ড পাওয়ায় বুধবার ঘরের মাঠে জুভেন্টাস উইঙ্গার নিকো গঞ্জালেসকে পাবেন না লিওনেল স্কালোনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।