যশোরের অভয়নগরে সড়কের পাশের পিলারে ধাক্কা লেগে আবু বক্কর (১৮) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওহিদুজ্জামান রাতুল (১৯) নামে অপর এক যুবক।
শনিবার (২১ মার্চ) রাতে উপজেলার পাচুড়িয়া গ্রামে শংকরপাশা-আমতলা সড়কে ঘটনাটি ঘটে।
মারা যাওয়া আবু বক্কর উপজেলার লেবুগাতী গ্রামের এরশাদ আলী শেখের ছেলে। আহত রাতুল একই গ্রামের জালাল উদ্দিন শেখের ছেলে। আবু বক্কর ও রাতুল সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
আরো পড়ুন:
রাজধানীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত এক
নাটোরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে সেনাসদস্য নিহত
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শনিবার রাতে আবু বক্কর ও রাতুল উপজেলার নওয়াপাড়া বাজার থেকে শংকরপাশা-আমতলা সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলে লেবুগাতী গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন। মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন রাতুল। সড়কের বাঁক অতিক্রম করার সময় মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারান রাতুল। এসময় মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে থাকা সাংকেতিক পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আবু বক্কর ও রাতুল দুইজনই গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু বক্করকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মশিউর রহমান বলেন, “রাত ৯টার দিকে দুইজনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। একজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। গুরুতর আহত অপরজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
অভয়নগর থানার ওসি আবদুল আলিম বলেন, “মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের পিলারের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে মোটরসাইকেলের এক আরোহী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন অপর আরোহী। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন ন হত আহত স ব স থ য কমপ ল ক স উপজ ল সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা
যশোরের মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের অনেক গ্রাম বছরে চার মাস জলাবদ্ধ থাকে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। পলি পড়ে নদীগুলো নাব্য হারিয়েছে। ফলে, ভারী বৃষ্টির পানি সহজে ও দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না।
যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, যশোরে জুন মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত ধরা হয় ২৯৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার এবং জুলাই মাসে ৩০৪ দশমিক ১০ মিলিমিটার। গত জুন মাসে যশোরে ২৯৯ মিলিমিটার এবং চলতি জুলাই মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ৫১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে, ভবদহ অঞ্চলের ৫২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। বিল উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে আশপাশের গ্রামগুলোতে।
সুন্দলী গ্রামের তন্ময় বিশ্বাস বলেছেন, “উঠোনে প্রায় হাঁটুজল। আরেকটু বাড়লে ঘরে জল উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেছেন, “ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মধ্যে মাত্র ছয়টি গেট খোলা হয়েছে। সবগুলো গেট খুলে দিলে আরো বেশি জল নামত। কিন্তু, পানি উন্নয়ন বোর্ড সব গেট খুলছে না। এলাকার বিলে টাইডল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার) চালু না করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেছেন, “নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। এতে এলাকার পানি দ্রুত সরে যাবে।”
তিনি বলেন, “ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সেনাবাহিনী আগামী মাসে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননে কাজ শুরু করবে। এছাড়া, আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে কাজ শুরু হবে।”
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক