অধ্যাপক জিনাত হুদাকে গ্রেপ্তার করার দাবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের
Published: 23rd, March 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জিনাত হুদার বিচারের দাবি জানিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
আজ রোববার সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুস সালাম ও অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি, চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন এবং গণহত্যায় উৎসাহিত করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ প্রত্যাখ্যাত ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা সমিতির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন। সাদা দলের পক্ষ থেকে আমরা ফ্যাসিস্টের দোসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে প্রত্যাখ্যাত জিনাত হুদার এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে সাদা দলের নেতারা বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রত্যাখ্যাত এবং শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় জিনাত হুদা আর সমিতির সাধারণ সম্পাদক নন। এরপরও সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল ও প্রশাসনকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন বলে আমরা মনে করি
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে হামলা১৪ ডিসেম্বর ২০২৪নেতারা আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে নিয়ে বিষোদ্গার, নেতিবাচক মন্তব্য, গণ–অভ্যুত্থানের বিরোধিতা ও শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি হয়ে গণভবনে উপস্থিত হয়ে শেখ হাসিনার গণহত্যাকে সমর্থন দেওয়ায় জিনাত হুদাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘১০০ বছরের ইতিহাসে আমিই প্রথম মহিলা সাধারণ সম্পাদক। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারী হিসেবে সাদা দলকে পরাজিত করে আমি সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবেই আমার কাজ করছি। এই বিবৃতি আমার বিরুদ্ধে তাঁদের সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।’
আরও পড়ুনএত প্রাণহানি কারও কাম্য হতে পারে না২৪ জুলাই ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ