বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচিং স্টাফ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ। চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার পর ফিল সিমন্সকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাবেক এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের মেয়াদ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। এবার তাকে রেখে দেওয়া হবে নাকি নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে সে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজকের বোর্ড সভায়।

সোমবার (২৪ মার্চ) বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির ১৯তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সভাপতি ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত থাকবেন পরিচালকবৃন্দ।

প্রধান কোচের পাশাপাশি সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মেয়াদও শেষ হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর। বোর্ড সভায় কোচিং স্টাফ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক নিয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে, কারণ এই ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

ধারণা করা হচ্ছে, টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন লিটন দাস। পাশাপাশি কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সকে রেখে দেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সহকারী কোচ সালাউদ্দিনকেও পুনরায় রাখার বিষয়ে বিসিবি ইতিবাচক। সম্প্রতি অবসর নেওয়া মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর বিষয়টিও বোর্ড সভায় আলোচনায় আসতে পারে।

এছাড়া সভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার সূচিতে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিন ফরম্যাটে ম্যাচ ফি বৃদ্ধির সম্ভাব্য ঘোষণা, পূর্বাচল স্টেডিয়াম প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘পপুলাস’-এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত, বিপিএলের টিকিটের আয় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে ভাগাভাগি এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেতন বৈষম্য দূর করার আলোচনা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ