ঢাকা থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত গিয়েছেন উড়োজাহাজে চড়ে। বাকি ১০০ কিলোমিটার পথের মধ্যে অর্ধেকটা পাড়ি দিয়েছেন শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে ব্যাপক ‘শোডাউন’ দিয়েছেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর ছেলে সারজিস আলম। গত মাসে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) হয়েছেন তিনি।

সারজিস আলম রাজনৈতিক দল গঠনের পর প্রথমবারের মতো নিজ জেলা পঞ্চগড়ে এসেছেন আজ সোমবার। শতাধিক গাড়ির (কার-মাইক্রোবাস) বহর নিয়ে পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলা সফর করেছেন তিনি।

সারজিস আলম ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে করে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। সেখানে কয়েকটি গাড়ি নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা অপেক্ষা করছিলেন। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। দুপুরে তিনি দেবীগঞ্জ সদরের ফার্মগেট এলাকায় পৌঁছান। সেখানে জেলার পাঁচ উপজেলা থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে আসা এনসিপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। পরে সেখান থেকে তিনি ছাদখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের বিজয় চত্বরে যান। সেখানে একটি পথসভায় বক্তব্য দেন সারজিস।

আটোয়ারী উপজেলার রাখালদেবী এলাকার বাসিন্দা মিলন ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেবীগঞ্জ ফার্মগেট এলাকায় সারজিস আলমকে নিতে গিয়েছিলাম। তবে আমাদের আগেই চারটি গাড়ি সারজিস আলমকে আনতে সৈয়দপুরে গিয়েছিল। পরে বোদা, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলা ঘুরে আটোয়ারীতে এসে ইফতার করেছি।’
দেবীগঞ্জ উপজেলা শহর সংলগ্ন করতোয়া নদীর ওপর চতুর্থ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে শতাধিক গাড়িবহরের জন পাঁচ হাজার টাকা টোল দেন সারজিস। সেতুর টোল আদায়কারী বাবু বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে ১৩৫টি গাড়ি আছে। সব মিলিয়ে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা টোল দিয়েছে।’

আটোয়ারী উপজেলার মাইক্রোবাস চালক মো.

আসিফ বলেন, ‘গাড়ির সঠিক সংখ্যা বলতে পারছি না। তবে দেড় শ গাড়ির বেশি হতে পারে। আমাদের একেকটি গাড়ি সাত হাজার টাকা করে নির্ধারণ হয়েছে।’

দেবীগঞ্জে পথসভা শেষ করে সারজিস আলম গাড়িবহর নিয়ে বোদা উপজেলার দিকে যান। সেখানে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে একটি পথসভা করে পঞ্চগড় শহরের ওপর দিয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলায় চলে যান সারজিস।

পরে তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের তেঁতুলতলায় পথসভা শেষে গাড়িবহরটি পঞ্চগড় জেলা শহরে ফিরে আসে। তবে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পথসভা করার কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা হয়নি।

সারজিস আলমের গাড়িবহরে ১৩৫টি গাড়ি ছিল বলে জানিয়েছেন দেবীগঞ্জ শহর সংলগ্ন করতোয়া নদীর ওপর চতুর্থ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল আদায়কারী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শত ধ ক গ ড় গ ড় বহর বহর ন য় আম দ র আট য় র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’

আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
  • আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
  • আড়াইহাজারে জামায়াতে ইসলামীর পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫