নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের পথসভায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার জাহাজমারা বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। হান্নান মাসউদের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপি নামধারী কিছু লোকের নেতৃত্বে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় এসসিপির পাঁচ-ছয়জন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে রাত সাড়ে আটটা থেকে জাহাজমারা বাজারে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এনসিপির কর্মী-সমর্থকেরা। রাত সাড়ে নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছিল।

অবস্থান কর্মসূচিস্থলে থাকা হান্নান মাসউদের প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইউছুফ প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ এলাকার দুস্থ মানুষের খোঁজখবর নিতে হাতিয়ায় আসেন। আজ বিকেলে তিনি উপজেলার জাহাজমারা বাজারে যান। ইফতার শেষে সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে তিনি বাজারে একটি পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপি নামধারী একদল লোক বাজারের পশ্চিম দিক থেকে একটি মিছিল নিয়ে অতর্কিতে পথসভায় বাধা দেন এবং হামলা চালান। তাদের হামলায় মো.

তুহিনসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

মোহাম্মদ ইউছুফের অভিযোগ, হামলাকারীরা আবদুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় উপস্থিত জনতা ধাওয়া করলে তাঁরা পালিয়ে যান। পরে তাঁরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবিতে হান্নান মাসউদের নেতৃত্বে জাহাজমারা বাজারে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এ নিয়ে কথা হয় এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এমন সময় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কয়েকজন মিছিল নিয়ে আমাদের মিটিংয়ে ঢুকে যায়। তাঁরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালান। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

হান্নান মাসউদ আরও বলেন, ‘হামলার সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে আমরা সড়কে অবস্থান নিয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজমারায় কারা কী করেছে, তার কিছুই জানেন না তিনি।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, হান্নান মাসউদের পথসভায় হামলার খবর তিনি শুনেছেন। তিনি ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ন ন ন ম সউদ র প প রথম আল ক এনস প র পথসভ য় ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’

আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।

অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
  • আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
  • আড়াইহাজারে জামায়াতে ইসলামীর পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫