আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
Published: 24th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘গত ১৬ বছর জুলুম-নির্যাতন ও জুলাই গণহত্যা চালানোর পর আওয়ামী লীগ দল হিসেবে বৈধতা রাখতে পারে না। এদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।’ সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে জেলা এনসিপির আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মানুষের প্রত্যাশা এবং ভালোবাসা নিয়ে নতুন রাজনীতি করতে চাই। যা বাংলাদেশকে নতুনভাবে তৈরি করবে। এনসিপি এখন তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তা হচ্ছে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার ও সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দাবি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার প্রক্রিয়া চলছে, যা নিয়ে এনসিপি তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করেছে। যেকোনো উপায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে জাতীয় নাগরিক পার্টি তা প্রতিহত করবে।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘এ দেশের মানুষ চায় না জুলাই অভ্যুত্থানের পর পুরোনো রূপেই দেশের রাজনীতি চলুক। আমরা দেশের সংস্কার ও সংবিধান পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাব। এই সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনে যেতে হবে। গণপরিষদ ছাড়া আর কোনো নির্বাচনের কোনো ম্যান্ডেট নাই। এই সংবিধান একটি প্রশ্নবিদ্ধ সংবিধান। এই সংবিধান অভিশপ্ত সংবিধান। এখানে বেশির ভাগ মানুষের মতামতের জায়গা রাখা হয় নাই। এই সংবিধানে তরুণ প্রজন্মের লড়াই–সংগ্রামের কোনো ছিটেফোঁটা নাই। মোটাদাগে এই সংবিধান একদলীয় সংবিধান। এই পার্লামেন্ট এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক পার্লামেন্ট ছিল। আমরা যদি তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে আগ্রহী করতে চাই, তাহলে এখানে যে মাসল পাওয়ার পলিটিকস রয়েছে, তা পরিবর্তন করে দায়িত্বের রাজনীতি করতে হবে। এই দায়িত্ব শুধু এনসিপির না। কারণ, অভ্যুত্থ্যান ছিল সব দলের অংশগ্রহণে। তাই এই দায়িত্ব সব দলকেই নিতে হবে।’
ইফতার অনুষ্ঠানে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আমিনের সভাপতিত্বে ও তামীম আহমেদের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ অঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান প্রমুখ। ইফতারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম এই স ব ধ ন এনস প র র র জন র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিতে হতো: নাহিদ ইসলাম
মানবিক করিডরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আজ বুধবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির নাহিদ এ কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই দলের বৈঠক হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, এই সরকার একটি ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এবং পরিচালিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি একটা সমর্থন আছে। ফলে জাতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এই করিডর বা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি কীভাবে থাকবে, তা তারা (এনসিপি) এখনো স্পষ্ট নয়। তবে মানবিক করিডরের বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দল যে বক্তব্য–বিবৃতি দিচ্ছে, তার সঙ্গে তারা একমত।
জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যের জায়গাটা ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সে উদ্দেশ্যই মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসা। ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন নিম্ন ও উচ্চ উভয় কক্ষেই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু এনসিপি উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেছে। ইসলামী আন্দোলন নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য কেন গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন, আমরা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছি। উনারা বলেছেন, বিষয়টি ভেবে দেখবেন।’
বৈঠকে দলগতভাবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার চলার সময় তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধন স্থগিত করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ে দুই দল একমত।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং জনগণের অধিকার হরণের মতো কর্মকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশের জন্য, রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্যই জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে এসেছিল। যদি পুরোনো বন্দোবস্তের জন্য কেউ চেষ্টা করে, জনগণ তা মেনে নেবে না।
সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির।
বিষয়গুলো হলো দ্রুত স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন; গণহত্যা ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা এবং সর্বশেষ মৌলিক সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।
মতবিনিময় সভায় এনসিপির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, আতিক মুজাহিদ, সরোয়ার তুষার, আশরাফ উদ্দিন মাহদী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম প্রমুখ।