কেইপিজেডের ভেতরে আটকে পড়া তিনটি হাতির কী হবে
Published: 25th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের আনোয়ারার কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) পাহাড়ে ঘেরা এলাকায় আটকে পড়ে আছে তিনটি হাতি। এসব হাতি চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যাভাবও দেখা দিয়েছে। ফলে প্রায়ই লোকালয়ে নেমে আসছে হাতিরা। হাতির আঘাতে প্রাণ যাচ্ছে মানুষেরও। এ অবস্থায় হাতি তিনটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
কেইপিজেডে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেইপিজেডে অব্যাহতভাবে বনাঞ্চল ও পাহাড় কেটে হাতির আবাসস্থল নষ্ট করা হচ্ছে। হাতির চলাচলের পথে যানবাহন ও বিভিন্ন পক্ষের লোকজনের আনাগোনা বেশি। তাদের খাবারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগুন জ্বালিয়ে হাতিকে বিরক্ত করা হচ্ছে। এ কারণে হাতি লোকালয়ে ঢুকে যায় বারবার। পর্যাপ্ত ইআরটি (এলিফ্যান্ট রেসপেন্স টিম) না থাকায় হাতির আক্রমণে মানুষ ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে কেইপিজেডে হাতি ও মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণ এবং তা নিরসনের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবদেনে উল্লেখ করা হয়, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ এক্সকাভেটর দিয়ে পাহাড় কাটছে। এ জন্য স্বল্পমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে পাহাড় ও বন ধ্বংস বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
সুপারিশ বাস্তবায়নে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে বন বিভাগ মনে করছে। এসব কারণে হাতি লোকালয়ে ঢুকে জানমালের ক্ষতিসাধন করছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে বড়উঠান এলাকার একটি পাড়ায় একটি হাতি ঢুকে পড়ে। এ সময় হাতির আক্রমণে আরমান জাওয়াদ নামে তিন মাস বয়সী একটা শিশু নিহত ও দুজন আহত হন। এরপর এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে চার দিনের মধ্যে হাতি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তি মারা গিয়েছিল। ওই ঘটনার পর বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কেইপিজেডের হাতি সুরক্ষা এবং দ্বন্দ্ব নিরসনে এই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন কর দেন। ওই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। সদস্যসচিব করা হয় বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজকে।
জানতে চাইলে আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নভেম্বরে যেদিন কমিটি প্রথম কেইপিজেড পরিদর্শনে যায়, সেদিনই দেখা যায় তারা পাহাড় ও গাছপালা কাটছে। ওটা প্রতিবেদনের মধ্যেও উল্লেখ রয়েছে। আমরা স্বল্পমেয়াদি সুপারিশে পাহাড় ও বনাঞ্চল ধ্বংস বন্ধ করা, ইআরটি রাখা, হাতির করিডর উন্মুক্ত রাখার কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোনোভাবে হাতিগুলো সেখানে রাখতে চাচ্ছে না বলে আমাদের মনে হচ্ছে। সর্বশেষ ঘটনার সময়ও আগুন দিয়ে হাতি তাড়ানো হয়েছে। আর আরটিএ রাখা বন্ধ করে দিয়েছে তারা।’
কেইপিজেড এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর পর সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। ২২ মার্চ সকালে তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে পাঠ্যবই থেকে বাদ মোগল-সুলতানি শাসন, যুক্ত মগধ মৌর্য শুঙ্গ
ভারতে সপ্তম শ্রেণির নতুন সমাজবিজ্ঞান বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে দিল্লির মোগল এবং সুলতানি শাসনামলের কথা। এর বদলে নতুন সংযোজন করা হয়েছে ভারতীয় শাসকদের কথা।
নতুন শিক্ষানীতি অনুসরণ করে চলতি বছরে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সমাজবিজ্ঞানের নতুন বই প্রকাশ করেছে ভারতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং–এনসিইআরটি। পুরোনো বইয়ে মোগল আমল এবং সুলতানি সাম্রাজ্য নিয়ে আলাদা দুটি পরিচ্ছদ ছিল। নতুন বইয়ে ওই পরিচ্ছদ দুটি আর নেই। এ দুটির পরিবর্তে প্রাচীন ভারতীয় সাম্রাজ্যের ওপর লেখা একটি নতুন পরিচ্ছদ। মোগল আমল ও সুলতানি সাম্রাজ্যর ওই পরিচ্ছদে মুহাম্মদ বিন তুঘলক, ইখতিয়ার উদ্দিন বিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি, মামলুক ও ইব্রাহিম লোদির কথাও পড়ানো হতো। এগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় শাসকদের মধ্য মগধ, মৌর্য ও শুঙ্গ সাম্রাজ্যসহ কয়েকজন শাসকের কথা নতুন বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ২০২৫ সালে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে হওয়া কুম্ভমেলার প্রসঙ্গও আছে নতুন বইয়ে। এগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ এবং অটল টানেলের কথা। নতুন বইয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামও অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে এনসিইআরটি। নতুন বইগুলোতে ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কেন্দ্রীয় বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে পড়ানো হয়। এনসিইআরটির নির্দেশিকা মেনে গত কয়েক বছরে পরিবর্তন ঘটেছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম। কোনো শ্রেণিতে মোগল যুগ বাদ পড়েছে। কোথাও ডারউইনের বিবর্তনবাদ ও কোথাও নারী আন্দোলনের ইতিহাসও বাদ দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইকোনমিক টাইমস ও আনন্দবাজার
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় বিদেশি ছাত্রদের ভিসা ফি আরও বাড়ছে২৮ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা: যাত্রা শুরু করবেন কোথা থেকে, কীভাবে?২৮ এপ্রিল ২০২৫