বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দুটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি- জাইকা। চুক্তির আওতায় জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) ঋণের মাধ্যমে ফুড সেফটি টেস্টিং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট ও মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রকল্পের (অষ্টম কিস্তি) জন্য সবমিলিয়ে ৮৫ হাজার ৮১৯ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন দেওয়া হবে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।  

জাইকার বাংলাদেশ কার্যালয় মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও জাইকার বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমাহিদে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি।

ফুড সেফটি টেস্টিং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় একটি ফুড সেফটি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি ভবন, খাদ্য পরীক্ষাগার কক্ষ, প্রশিক্ষণ ভবন, অফিস ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে খাদ্য নিরাপত্তা পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে যৌথভাবে কাজ করবে জাইকা এবং  বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। এ প্রকল্পের ঋণের সুদের হার নির্মাণ কাজের জন্য ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ ও পরামর্শক সেবার জন্য শুন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছরের প্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।

মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, যেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, সড়ক ও সেতু। এ প্রকল্পের অষ্টম কিস্তির হার নির্মাণ কাজ ও যন্ত্রপাতির জন্য ১ দশমকি ৯৫ শতাংশ ও পরামর্শক সেবার জন্য শুন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ প রকল প র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পুনঃতফসিলের

আর্থিক সংকটে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল করতে ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালা চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই নীতির আওতায় সর্বোচ্চ দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের পদত্যাগ

নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০২৪ সালের আগস্ট এর আগে অনেক বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত সমস্যায় (অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রার অস্থিরতা, ইউটিলিটি সমস্যাসহ) পড়ে ঋণ পরিশোধে বিপাকে পড়েছে। ব্যাংকিং সেবায় বাধা থাকায় ব্যবসা সঠিকভাবে চালাতে পারেনি। এতে ব্যাংকের ঋণ আদায় ও বিতরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠন করে ব্যবসা সচল ও লাভজনক করার লক্ষ্যে নীতি সহায়তা দিতে নতুন উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

নতুন সার্কুলারের অন্যতম প্রধান সুবিধা হলো গ্রেস পিরিয়ডের ব্যবস্থা। অর্থাৎ, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলো দুই বছর পর্যন্ত মূলধন বা সুদ পরিশোধ থেকে বিরত থাকতে পারবে। এর ফলে তারা ব্যবসা পুনরায় চালু করে আয় থেকে ঋণ শোধ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত শ্রেণিকৃত ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ ২ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে।এজন্য ঋণগ্রহীতাকে ন্যূনতম ২ শতাংশ নগদ ডাউনপেমেন্ট দিতে হবে। অতীতে ৩ বার বা তার বেশি পুনঃতফসিল করা হলে ডাউনপেমেন্ট ৩ শতাংশ হবে। নতুন সুদের হার সংশ্লিষ্ট খাতের সর্বনিম্ন সুদহারের চেয়ে ১ শতাংশ কম নির্ধারণ করতে পারবে। কিস্তি পরিশোধ হবে মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে। আদায় না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত সুদ আয় খাতে নেওয়া যাবে না। কিস্তি বকেয়া পড়লে ঋণ আবারো শ্রেণিকৃত হবে।

ব্যাংকগুলোকে ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে ঝুঁকি নিরূপণ করবে। প্রয়োজন হলে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিরীক্ষা করাতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতারা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নীতি সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ব্যাংক আবেদন পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবে, তবে ডাউন পেমেন্ট নগদায়নের পরই আবেদন কার্যকর হবে।

নীতিগত সহায়তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি লাগবে না, তবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হলে, প্রধান ঋণদাতা ব্যাংক সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবে। ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ হলে ‘নীতি সহায়তা সংক্রান্ত বাছাই কমিটি’র কাছে আবেদন পাঠাতে হবে।

তবে জালিয়াতি বা প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া ঋণ কিংবা চূড়ান্তভাবে ঘোষিত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।

নতুন নীতিমালা কার্যকর হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে এবং আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পুনঃতফসিলের
  • তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী চীন পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল