পাকিস্তানে আট সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
Published: 29th, March 2025 GMT
পাকিস্তানে আট সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছেন। সেনাসদস্য ছাড়া বাকি নিহত ব্যক্তিদের আটজন তালেবান যোদ্ধা, একজন সাধারণ মানুষ। শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে কয়েকটি আলাদা হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রদেশটিতে গত কয়েক মাসে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা বেড়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র আজ শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে ‘সশস্ত্র তালেবানের’ বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সময় সাতজন সেনাসদস্য নিহত হন। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা একটি বাসায় লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর গুলি চালাচ্ছিলেন।
অভিযানে সামরিক হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী লড়াই হয়। এতে আট তালেবান সদস্য নিহত হন। একই সঙ্গে ছয় সেনাসদস্যও আহত হন।
দক্ষিণ বেলুচিস্তানের পুলিশ কর্মকর্তা মহসিন আলী এএফপিকে বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মোটরসাইকেলে একটি বোমা পেতে রেখেছিল। এটা বিস্ফোরিত হয়ে একজন সেনা নিহত হন। একই ঘটনায় একজন সাধারণ মানুষও প্রাণ হারান।
গত মাসে এই অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিল। এ ঘটনায় ছুটিতে থাকা বেশ কিছু সেনাসদস্য নিহত হন।
বেলুচিস্তান প্রদেশের গোয়াদর জেলায় পৃথক একটি সামরিক গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন সেনাসদস্য ও একজন সাধারণ নাগরিক আহত হন। এই জেলায় চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে। তাই এই অঞ্চলটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এএফপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর হামলায় ১৯০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যাঁদের বেশির ভাগই সেনাসদস্য।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বসন্ত অভিযান’ ঘোষণা করেছে।
ইসলামাবাদভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্যমতে, গত বছর পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ নিহত হন। গত এক দশকে দেশটিতে এক বছরে সন্ত্রাসী হামলায় এত বেশি মানুষ নিহতের এটাই রেকর্ড।
সহিংসতার অধিকাংশ ঘটনাই ঘটছে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন সদস য সশস ত র একজন স
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ