বেতন হয়নি, শ্রমিকদের অবস্থান চলছে
Published: 29th, March 2025 GMT
টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা আজ শনিবার পর্যন্ত তাঁদের বকেয়া বেতন ও পাওনা পাননি। কারখানার শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্রমসচিব সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আপাতত তিন কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে শ্রমিকেরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শ্রমিকেরা বলেছেন, দুই কোটি টাকা দিলে জনপ্রতি মাত্র ছয় হাজার টাকার মতো পাওয়া যাবে, যা দিয়ে বকেয়া বাসাভাড়াই দেওয়া যাবে না। শ্রমিক রেখা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বেতন দেওয়া না পর্যন্ত আমরা এখানে (শ্রমভবন) আছি। আন্দোলন চালিয়ে যাব। বেতন না পেলে ঈদ এখানেই করব।’
এদিকে শিল্পপুলিশ ও পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন জানিয়েছে, কিছু কারখানা ছাড়া বাকিগুলোর শ্রমিকেরা মার্চের অর্ধেক বেতন ও বোনাস পেয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত বেশির ভাগ কারখানায় ছুটি হয়েছে। অবশ্য বেতন-ভাতার দাবিতে টিএনজেডের শ্রমিকেরা শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন, যা শুরু হয়েছিল ২৩ মার্চ।
টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রুপটির তিনটি কারখানা বন্ধ। এসব কারখানার ৩ হাজার ১৬৬ জন শ্রমিকের পাওনা প্রায় ১৭ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার একটি কারখানার শ্রমিকদের পাওনার একটি অংশ দেওয়া হয়।
পুলিশ গত বৃহস্পতিবার টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক শরীফুল ইসলাম শাহীনকে হেফাজতে নিয়েছিল। তিনি কারখানার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছিল। বেতন-ভাতা পরিশোধের কথা ছিল গতকাল।
এদিন বিকেলে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক শরীফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বৈঠকে শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক বলেছেন যন্ত্রপাতি বিক্রি করে আপাতত দুই কোটি টাকা দেবেন। ঈদের পরে ৮ জুলাই আবার বৈঠক হবে। তিনি যতক্ষণ না শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করছেন, ততক্ষণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকবেন।
শ্রমিকেরা সচিবের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং বৈঠক শেষে শ্রমসচিব শ্রম ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়ি অবরোধ করেন। পরে সচিব আবার বলেন, তিন কোটি টাকা দেওয়া হবে। যদিও তা মানেননি শ্রমিকেরা।
এ সময় গাড়ির সামনে বসে পড়া শ্রমিক ফারজানা বেগম বলেন, ‘টাকা দেওয়া ছাড়া আমরা গাড়ি ছাড়ব না, সমাধান না দিয়ে তিনি (সচিব) চলে যাবেন কেন? সমাধান দেওয়া তাঁদের দায়িত্ব।’
শ্রম ভবনে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন না দিতে পারলেও আপাতত যেন এক মাসের বেতন ও বোনাস যাতে দেওয়া হয়। তাহলে অন্তত শ্রমিকেরা বাড়িতে গিয়ে কোনোরকম ঈদ করতে পারবে। তবে লিখিত দিতে হবে দ্রুত তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের।’
প্রায় সব কারখানা বেতন-ভাতা দিয়েছে
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, ৯৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ কারখানা ঈদের বোনাস এবং ৯৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ কারখানা মার্চ মাসের অর্ধেক বা পুরো বেতন পরিশোধ করেছে।
শিল্প পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুসারে যে ২৪৫টি কারখানায় সমস্যা হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল, তার সব কটিই পরিদর্শন করেছে বিজিএমএইএ। পরিদর্শন শেষে মাত্র ছয়টি কারখানায় সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। সেগুলোতে বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছিল।
নিট পোশাকশিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মো.
প্রতিবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় পোশাক কারখানাগুলোতে শেষ সময়ে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। কিছু কারখানা নিয়ে সংকট তৈরি হয়।
শ্রমিক সংগঠনগুলোর আন্তর্জাতিক জোট ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সালাউদ্দিন স্বপন বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় ভরপুর ক্রয়াদেশ আছে। এরপরও বেতন-ভাতা নিয়ে যা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট এনজ ড গ র প র পর শ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিসি ব্যাংকের পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত
বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৫৪৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে পর্ষদ সভাটি হয়।
এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, পরিচালক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, পরিচালক ও প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তানজিনা আলী, পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দিন, পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, পরিচালক মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নেওয়াজ, শামিমা নেওয়াজ, মোরশেদুল আলম চাকলাদার, নাহিদ বানু, স্বতন্ত্র পরিচালক মীর সাজেদ উল বাসার এবং স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম শামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আলম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির আনাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মো. মনিরুল আলম (কোম্পানি সচিব) ও মো. হাবিবুর রহমান এবং বোর্ড ডিভিশনের এসএভিপি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এনসিসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সভায় ব্যাংকের চলমান ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও কৌশলগত পরিকল্পনা–সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ১৭৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ২৭৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকটির মুনাফা কমেছে ১০২ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকটি মুনাফা করে ৫৮ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মুনাফা ২০১ কোটি টাকা।