চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে বিএনপি ও যুবদলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের পেলিশ্যা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। আটজন সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আরও অন্তত তিনজন স্থানীয় চিকিৎসকের চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পেলিশ্যা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মগধরা ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.

মিলাদের অনুসারীদের সঙ্গে মগধরা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. কামরুলের অনুসারীদের এই সংঘর্ষ হয়।

আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানেও দুই পক্ষ একে অন্যের ওপর চড়াও হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনে ২০ থেকে ৩০ জন চিকিৎসাধীন প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় গাছুয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুর রহীম উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মো. সোহেল নামের আহত এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে মোট আটজন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তিনি ছাড়া আহত অন্যরা হলেন মাহফুজ, মিলাদ, আলতাফ, আকবর, নোয়াব, পারভেজ ও দিদার। আহত যুবদলের নেতা কামরুল ও মাহিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সন্ধ্যা সাতটায় তাঁদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এলাকাতেই এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। মূলত পেলিশ্যা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্তৃত্ব নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে।’ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উত্তেজনার বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে ইতিমধ্যে নৌবাহিনী পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম সফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স প রথম আল ক স ঘর ষ ব এনপ য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ