পঞ্চগড়ে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, ঘুরতে আসা রাইডারের মৃত্যু
Published: 4th, April 2025 GMT
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের সরকার পাড়া-বটতলী এলাকায় বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
একই দিনে সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই তরুণের মৃত্যু হয়। তাঁর নাম ফরহাদ আহমেদ (৩০)। তিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী মাহফুজ হাসান (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত ফরহাদ আহমেদ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তিনি রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেট-এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় থাকতেন। আহত মাহফুজ হাসান ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ১৯ জন রাইডারের একটি দল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ঘুরতে আসছিলেন। বিকেলে মোটরসাইকেলগুলো বোদা উপজেলার বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কের সরকারপাড়া-বটতলী এলাকায় পৌঁছালে পঞ্চগড় থেকে দেবীগঞ্জগামী একটি গরুবাহী ট্রাকের সঙ্গে ফরহাদ আহমেদের মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের দুজন আরোহী ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে তাঁদের সঙ্গে থাকা অন্য রাইডাররা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের অবস্থার অবনতি হলে দুজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। পরে রংপুরে নিয়ে সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসা শুরুর পরপরই ফরহাদ আহমেদ মারা যান। মাহফুজ হাসান সেখানে চিকিৎসাধীন।
এদিকে ঘটনার পরপরই ট্রাক রেখে চালক পালিয়ে যান। তবে ট্রাকচালকের একজন সহকারীকে (১৬) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর ট্রাকচালক পালিয়ে গেছেন। তবে ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং চালকের ১৬ বছর বয়সী সহকারীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলাও হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা