পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের সরকার পাড়া-বটতলী এলাকায় বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

একই দিনে সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই তরুণের মৃত্যু হয়। তাঁর নাম ফরহাদ আহমেদ (৩০)। তিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী মাহফুজ হাসান (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহত ফরহাদ আহমেদ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তিনি রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেট-এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় থাকতেন। আহত মাহফুজ হাসান ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ১৯ জন রাইডারের একটি দল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ঘুরতে আসছিলেন। বিকেলে মোটরসাইকেলগুলো বোদা উপজেলার বোদা-দেবীগঞ্জ সড়কের সরকারপাড়া-বটতলী এলাকায় পৌঁছালে পঞ্চগড় থেকে দেবীগঞ্জগামী একটি গরুবাহী ট্রাকের সঙ্গে ফরহাদ আহমেদের মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের দুজন আরোহী ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে তাঁদের সঙ্গে থাকা অন্য রাইডাররা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের অবস্থার অবনতি হলে দুজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। পরে রংপুরে নিয়ে সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসা শুরুর পরপরই ফরহাদ আহমেদ মারা যান। মাহফুজ হাসান সেখানে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ঘটনার পরপরই ট্রাক রেখে চালক পালিয়ে যান। তবে ট্রাকচালকের একজন সহকারীকে (১৬) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর ট্রাকচালক পালিয়ে গেছেন। তবে ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং চালকের ১৬ বছর বয়সী সহকারীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলাও হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ