সাভারে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) সাভার পৌর এলাকার উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নীট গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন।

এর আগে, আজ সকালে শ্রমিকরা ঈদের ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার মূল ফটকে লে-অফের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, সকালে কারখানায় কাজে যোগ দিতে এসে নোটিশ দেখতে পান তারা। পরে কারখানা খুলে দেওয়াসহ বকেয়া পাওনা পরিশোদের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে ও মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে শ্রমিকদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৪

আলু কিনতে গিয়ে কথা কাটাকাটি, পিটুনিতে নিহত ১

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, “কারখানায় কাজ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রাইড গ্রুপের দুইটি কারখানায় লে-অফের নোটিশ লাগানো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা বলে মনে করছি। যদি কাজ না থাকে এবং মালিকপক্ষ কারখানা না চালাতে পারেন, তাহলে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।”

প্রাইড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দুইটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম বলেন, “মূলত অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই কারখানা দুইটিতে লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে কোভিডের সময় আমরা বড় একটা ধাক্কা খাই। সেটি কাটিয়ে উঠার পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের প্রধান বায়ার (পোল্যান্ড, রাশিয়া, ইউক্রেন) হারিয়ে আবারো ধাক্কা খেলে আমাদের ব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা নষ্ট হয়। এরপরও কাজের অর্ডার পেতে কষ্ট হচ্ছিল। এখন আবার জ্বালানি সমস্যা।”

তিনি আরো বলেন, “সব মিলিয়ে তিন মাস আগে থেকেই আমরা সমস্যার কারণে মাসের ৭ তারিখে বেতন দিতে না পেরে ১০ থেকে ১৫ তারিখে বেতন দিচ্ছিলাম। ঈদের আগে যাতে শ্রমিকদের সমস্যা না হয়, সেজন্য আমাদের অন্য ব্যবসা থেকে এনে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছি। শ্রমিকরাও জানে আমাদের হাতে ২ মাস ধরে কাজ নেই, তারা কারখানায় এসে বসে থাকতো। ব্যাংক এবং বায়াদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, আমরা আশাবাদী এই মাসের ২০-২২ তারিখে একটা সেটেলমেন্ট হয়ে গেলে তখন হয়তো আমরা লে-অফ থেকে বের হয়ে আসতে পারব।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর শ ধ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ