‘বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের পরিবর্তে নতুন সংঘ গঠিত হতে পারে’
Published: 7th, April 2025 GMT
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসংঘের পরিবর্তে নতুন সংঘ গঠিত হতে পারে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “জাতিসংঘের নিরব ভূমিকায় মুসলিম উম্মাহ ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। মুসলমানদের হত্যা করা হলে কোনো মানবাধিকার থাকে না। বিশ্ব মোড়লেরা মুসলমানদের মানুষই মনে করে না। তাদের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহ গর্জে উঠলে কেউ রক্ষা পাবে না।”
আরো পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে জামায়াতের ইফতার
শীর্ষ বিনিয়োগ সম্মেলনে থাকবে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির বুথ
ইসরায়েলকে ছিন্নভিন্ন করতে না পারা ইসলামী রাষ্ট্র নেতাদের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০০ কোটি মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বে যারা রয়েছে ইহুদিদের প্রতি তাদের আনুগত্যশীলতা প্রকাশ পাচ্ছে।”
ইহুদিদের প্রতি নতজানু নীতি পরিহার করে ইসলামী আদর্শে অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রধান এবং ওআইসির প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “মানবতাবিরোধী নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া। নেতানিয়াহুর নির্দেশে ফিলিস্তিনের অগণিত বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা সত্বেও জাতিসংঘ চুপ করে বসে রয়েছে। অনতিবিলম্বে জাতিসংঘ কর্তৃক ইসরায়েলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।”
ফিলিস্তিনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শুধু পতাকা উত্তোলন নয়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে কঠোর জবাব দিতে হবে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। তিনি বিশ্বের কাছে শ্রদ্ধা এবং আস্থার এক মহান ব্যক্তি।”
তাই বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসরায়েলি হামলা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল।
তিনি বলেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ না করলে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরায়েলের নাম মুছে দিতে হবে। এজন্য ২ শত কোটি মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বোমার আঘাতে মানুষের দেহ যখন ছিন্নভিন্ন হয়ে বাতাসে উড়ে জমিনে পড়ে সেই দৃশ্য কোন মানবতার অংশ?”
তিনি ধর্মের ভিত্তিতে বিশ্ববাসীকে মূল্যায়ন না করে, মানুষ হিসেবে বিশ্বের সকল মানুষকে সমান মূল্যায়ন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ড.
তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, “মুসলিম উম্মাহ যখন ঈদুল ফিতরের উৎসবে ঠিক সেই সময় সন্ত্রাসী ইসরায়েল গোষ্ঠী ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনের উপর এমনভাবে হামলা চালিয়েছে, লোকজনের লাশ পাখির মতো আকাশে উড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে জমিনে পড়েছে। এমন নিকৃষ্টতম ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।”
তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লংমার্চ করার প্রস্তুতি নিতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন বলেন, “যুদ্ধ বিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরায়েল সন্ত্রাসী কায়দায় ফিলিস্তিনে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনের রাফাহ্ শহর নিঃশেষ করার প্রতিবাদে মুসলিম উম্মাহর উচিত ইসরায়েলকে নিঃশেষ করে দেওয়া। ইসরায়েলের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে পারলে ইসরায়েল দুর্বল ও নিঃশেষ হয়ে যাবে।”
এজন্য তিনি, ইসরায়েলের সব পণ্য ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে বয়কট করার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, “২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল, ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে এই পর্যন্ত ৬১ হাজার বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলের পণ্য বয়কট করার মাধ্যমে সন্ত্রাসী ইসরায়েল গোষ্ঠীকে দুর্বল করতে হবে।”
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, “বায়তুল মুকাদ্দাস রক্ষা করা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জেহাদ করা মুসলমানদের জন্য ফরজ। জাতিসংঘের নিরব ভূমিকা মুসলমানদের ব্যথিত করছে।”
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী দেলাওয়ার হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি শামছুর রহমান।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, ডা. আতিয়ার রহমান, আবদুস সালাম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, ড. মোবারক হোসেন, কামরুল আহসান হাসান, শাহীন আহমদ খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সহকারী সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমনসহ মহানগরীর নেতারা।
সমাবেশে শেষে নূরুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীসহ হাজার-হাজার তৌহিদী জনতা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিজয়নগর হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথসভার মাধ্যমে কর্মসূচি সম্পন্ন করে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল র ব র দ ধ ক ন দ র য় মজল স র সদস য ও ঢ ক বর বর চ ত ন বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
নেই নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও ছুটি
নিয়োগপত্র নেই। এ কারণে চাকরির নিশ্চয়তাও নেই। দেওয়া হয় না পরিচয়পত্র। নেই কর্ম ঘণ্টার হিসাব। তবে রয়েছে মজুরিবৈষম্য ও জীবনের ঝুঁকি। এ চিত্র খুলনার বরফকলে কর্মরত বরফ শ্রমিকদের।
অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত বরফকলের শ্রমিকেরা জানেন না মে দিবসের অর্থ। তারা শুধু এটুকু জানেন, কাজ থাকলে মজুরি পাবেন, অন্যথায় জুটবে না কিছু। খুলনার নতুন বাজার, রূপসা, শিপইয়ার্ড ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বরফ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে উঠে এসেছে ঝুঁকি ও বৈষম্যের এই চিত্র।
সরেজমিনে জানা গেছে, লবণ পানি এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের সংমিশ্রণে বরফের প্রতিটি ক্যান তৈরি হয়। এ কাজে প্রচণ্ড ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যুসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এছাড়াও অধিকাংশ সময় হাত-পা ভিজে ঠান্ডা থাকায় ক্ষত থেকে ইনফেকশন হয়। এর বাইরে বুকে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভোগেন এখানকার শ্রমিকেরা। পাতলা বরফে অনেক সময় হাত-পা কেটে যায়। কিন্তু মালিক বা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কোন ধরনের অ্যাপ্রোন বা নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করেন না। তবে দুর্ঘটনায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আরো পড়ুন:
ফুড ডেলিভারিম্যান: খাবারের রাজ্যে অতৃপ্ত দিনরাত
মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার, নিউমার্কেট, শিপইয়ার্ড, রায়েরমহল এবং রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসা এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টি বরফকল রয়েছে। এর মধ্যে নতুন বাজার ও পূর্ব রূপসায় সর্বাধিক বরফকল রয়েছে। এসব কলে গড়ে দশ জন হিসেবে দেড় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন।
রূপসার নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করেন মোহাম্মদ রাসেল হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি হলেও পরিবার নিয়ে রূপসার জাবুসা এলাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘ সাত বছর ধরে এই বরফকলে কাজ করছেন তিনি। রাসেল জানান, তাদের মাসিক বেতন নেই। নেই নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র। মূলত উৎপাদনের উপর প্রতি পিস বরফের ক্যান অনুযায়ী ১২ টাকা হারে মজুরি পান। নামমাত্র এ মজুরিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার ঠিকমতো চলে না।
‘‘তিন বছর আগে নির্ধারণ করা মজুরি এখনো চলছে। লোকসানের অজুহাতে মালিকপক্ষ মজুরি বাড়াতে চান না। তাদের মতো শ্রমিকদের কোন বেতন-বোনাস নেই। নো ওয়ার্ক, নো পে অর্থাৎ কাজ থাকলে মজুরি আছে কাজ না থাকলে নেই। মালিকদের এ সিদ্ধান্ত না মানলে চাকরিও থাকে না।’’ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন রাসেল হোসেন।
একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘গড়ে প্রতিমাসে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা মজুরি পাই। কিন্তু মাসিক খাবার খরচ প্রায় ৩ হাজার টাকা। বাসা ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা চলে যায়।’’
তবে জাকির হোসেন ব্যাচেলর হওয়ায় কারখানার মধ্যেই থাকেন। বিয়ের পর এ কাজ করার ইচ্ছা নেই বলে জানান তিনি।
বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১-এ অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন মোঃ সেলিম শেখ। তার জন্ম নড়াইলের লক্ষ্মীপাশা হলেও কর্মসংস্থানের কারণে রুপসার বাগমারা গ্রামে বসবাস করছেন। তিনি জানান, বর্তমান বয়স ৮৪। ২০ বছর বয়স থেকেই বরফ কারখানার সঙ্গে জড়িত। প্রথমে হেলপার হিসেবে ২৫০০ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে অপারেটর হিসেবে মাসিক ১৫ হাজার টাকা পান। প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে কাজ শুরু করতে হয়। তবে সবসময় উৎপাদন না থাকলেও ২৪ ঘণ্টা কারখানায় থাকতে হয়। ছুটি পান না।
‘অ্যামোনিয়া গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। তবে তিনি কখনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হননি বলে জানান তিনি।
‘মায়ের দোয়া আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজে’র শ্রমিক জাকারিয়া হাওলাদার বলেন, ‘‘চার বছর বরফকলে কাজ করছি। চাকরির ভবিষ্যৎ নেই। শ্রম দিতে পারলে মজুরি হয়, না হলে হয় না। নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেন না মালিকপক্ষ। বেতন বাড়ানোর কথা বললে তারা আমলে নেন না।’’
একই এলাকার ‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করছেন মোঃ মুন্না গাজী ও মোঃ হাসান শেখ। তারা নগরীর জিন্নাপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তারা দুজনেই মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন পান। এর বাইরে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই।
‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’র ম্যানেজার আশিকুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সুরক্ষায় উদাসীন। এখানে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার মাঝেমধ্যেই লিক হয়। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৩২টি আইস উৎপাদনের ক্যানের প্লান্ট রয়েছে। তবে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ ক্যান বরফ উৎপাদন হয়। ছয়জন শ্রমিক কাজ করে বলে জানান তিনি।
‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ- ২'র ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বলেন, ‘‘বরফের মূল ক্রেতা চিংড়ি ও সাদা মাছের ব্যবসায়ীরা। এর বাইরে গ্রীষ্ম মৌসুমে ভ্রাম্যমাণ ও দোকানে শরবত বিক্রেতারাও কারখানা থেকে বরফ কিনে নেন। গ্রীষ্ম মৌসুমের ৬ মাস চাহিদা থাকে এবং কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায়। তবে শীত মৌসুমের ছয় মাস বরফের চাহিদা কম থাকে। তখন কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ও মজুরি দিয়ে লোকসান গুণতে হয়।’’
জামাল উদ্দিন স্বীকার করেন কারখানায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলেও তা এড়াতে কোন সরঞ্জাম নেই। তবে অপারেটরদের অ্যামোনিয়া গ্যাসের ঝুঁকি প্রতিরোধে মাক্স সরবরাহ করা হয়।
‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১'র মালিকপক্ষের প্রতিনিধি রিয়াদ-উল-জান্নাত সৈকত বলেন, ‘‘ব্যবসা খুব ভালো যাচ্ছে না। কখনো লাভ, কখনো লোকসান এভাবেই চলছে। গত বছর কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৯ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।’’
তবে লাভ হলে শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে শ্রমিকদের সংগঠন রূপসা বেড়িবাঁধ হ্যান্ডলিং শ্রমজীবী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিপন শেখ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘‘নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি বরফকলের ৪০ জন শ্রমিক তাদের ইউনিয়নের সদস্য। বিগত দেড় বছর আগে মজুরির সমস্যা নিয়ে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে দুই একজন শ্রমিক অভিযোগ করলে ইউনিয়নের মাধ্যমে সেটির সমাধান করে দেন তারা। কিন্তু বর্তমানে অভিযোগ নিয়ে কেউ আসে না।’’
বরফকলের শ্রমিকদের নিয়ে তারা মে দিবসের কর্মসূচি পালন করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তারা//