বৈঠকে না এসে সমাবেশ করার বিষয়ে টিএনজেডের এক শ্রেণির শ্রমিকদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেছেন, কিছু শ্রমিকের অসৎ উদ্দেশ্য আছে। এ ছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে ছাঁটাই করা হলে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার তৈরি পোশাক খাত–বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি-টিসিসি) ২০তম সভা শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শ্রমসচিব। বৈঠক ডাকার কারণ ব্যাখ্যা করে শ্রমসচিব বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা এমন প্রতিবেদন দিচ্ছে যে ঈদের পর শ্রমিকেরা যখন কাজে ঢুকবে, তখন বড় ধরনের ছাঁটাই করা হবে এবং আরেকটা উত্তেজনা তৈরি করা হবে। সে কারণেই গতকাল বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই করলে কারখানামালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

গত সোমবার টিএনজেডের শ্রমিকেরা কারখানার কাছে সমাবেশ করেছেন। শ্রমসচিবের প্রশ্ন, তাঁরা মঙ্গলবার বৈঠকে না এসে ওখানে সমাবেশ করছেন কেন? মনে হচ্ছে আবার তাঁরা পানি ঘোলা করবেন। সমস্যা সমাধানের জন্য যখন আলোচনা চলছে, তখন আরেক গ্রুপ বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাসে চড়ে এসে শ্রম ভবনের সামনে বসে আছেন। এগুলো কেন হবে? পুরো জিনিসটাকে খুব সরলভাবে দেখলে হবে না। পেছনে অনেক বিষয় আছে।

শ্রমসচিব বলেন, ‘একটি পক্ষ চাচ্ছে না যে আমাদের কারখানাগুলো চলুক। তারা পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের দিয়ে নানা রকম সমস্যা তৈরি করছে। তারা প্রকৃত অর্থে এই দেশের শত্রু। এ ছাড়া ছাঁটাই করতে হলে আইন অনুযায়ী করতে হবে। বিধিবহির্ভূতভাবে ছাঁটাই করা হলে মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়া হবে। ধরে নেওয়া হবে যে মালিক শ্রমিক ছাঁটাই করে শ্রমিক অসন্তোষ তৈরির মাধ্যমে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, যারা পোশাক খাত নিয়ে চক্রান্ত করবে, তারা দেশের শত্রু।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, অনেক শ্রমিকনেতা উসকানি দিচ্ছেন। উসকানিদাতাদের খুঁজে বের করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে কেউ রাস্তা দখল করতে পারবেন না। বিক্ষোভের অধিকার আছে; কিন্তু রাস্তা আটকে রাখার অধিকার নেই কারও। কেউ তা করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শ্রমসচিব বলেন, দুই দফায় টিএনজেডকে টাকা দিয়েছে সরকার। তারপরও বকেয়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি তারা। নভেম্বরে ১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এখন আবার ১৭ কোটি টাকা বকেয়া। কোরবানির ঈদের সময় আবার ১৫ কোটি টাকা বকেয়া হবে। এটা হতে পারে না। সিদ্ধান্ত হয়েছে, টিএনজেডের চারটি কারখানাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসব কারখানার শ্রমিকসংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ২০০।

বেক্সিমকো মডেল টিএনজেডের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশে ফিরতে টিএনজেডের মালিককে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হবে। তাঁর ওপর আস্থা রাখা যাচ্ছে না।

শ্রমসচিব বলেন, টিএনজেডের সমস্যা সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। তাদের সম্পদ মূল্যায়ন করা হবে এবং বের করা হবে, শ্রমিকদের পাওনা কত আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ রমসচ ব ব ট এনজ ড র ব যবস থ ট ই কর

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিসি ব্যাংকের পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত

বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৫৪৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে পর্ষদ সভাটি হয়।

এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, পরিচালক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, পরিচালক ও প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তানজিনা আলী, পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দিন, পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, পরিচালক মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নেওয়াজ, শামিমা নেওয়াজ, মোরশেদুল আলম চাকলাদার, নাহিদ বানু, স্বতন্ত্র পরিচালক মীর সাজেদ উল বাসার এবং স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম শামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আলম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির আনাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মো. মনিরুল আলম (কোম্পানি সচিব) ও মো. হাবিবুর রহমান এবং বোর্ড ডিভিশনের এসএভিপি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এনসিসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সভায় ব্যাংকের চলমান ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও কৌশলগত পরিকল্পনা–সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ১৭৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ২৭৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকটির মুনাফা কমেছে ১০২ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকটি মুনাফা করে ৫৮ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মুনাফা ২০১ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ