চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালের মাঠ থেকে ৩-০ গোলে হেরে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয় লেগে ১৬ এপ্রিল রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মাঠে নামবে লস ব্লাঙ্কোসরা। জিতে সরাসরি সেমিফাইনালে যেতে ৪-০ গোলে জিততে হবে কার্লো আনচেলত্তির দলের। ৩-০ গোলে জিতলে যেতে হবে টাইব্রেকারে। 

ওই ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ছাদ বন্ধ করে দেবে রিয়াল মাদ্রিদ। ভক্তরা কানফাঁটা চিৎকারে গানারদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়বে। এমবাপ্পে-বেলিংহামরা নিজেদের স্নায়ুচাপ ধরে রেখে একের পর এক আক্রমণ করতে চাইবে। লড়বে কামব্যাকের জন্য। যেভাবে পূর্বে এই বার্নাব্যুতে ম্যানসিটি, চেলসি, পিএসজির নাভিশ্বাস তুলে কামব্যাক সম্পন্ন করেছে তারা।  

বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদ ২, ৫, ৭ মিনিটেই দুর্দান্ত সব কামব্যাকের গল্প লিখেছে। সেখানে ৯০ মিনিট অনেক সময়। নর্থ লন্ডনের ভুল ডাস্টবিনে ফেলে দলটির ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তি তাই দলের ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। কম কথায় ‘ছাড়বো না হাল’ এই বার্তা দিয়েছেন কিয়িলান এমবাপ্পে। 

রিয়াল মাদ্রিদকে গত মৌসুমে লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো কোচ আনচেলত্তি বলেছেন, ‘যা ঘটেছে সবকিছু ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। এই ধাক্কা সামলে নেওয়া কঠিন.

..। তারা খুব উচ্চ পর্যায়ের দল। খুব সংগঠিত। এই ধরনের দল শেষ দিকে আক্রমণের গতি বাড়ায়। আমাদের জন্য এখন সেমিতে যাওয়া কঠিন। তবে আমাদের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করে যেতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যা যা করার আছে সব করতে হবে। বাজে এই ম্যাচের প্রতিক্রিয়া সামনের ম্যাচে দেখাতে হবে। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ বার্নাব্যুতে কিছুক্ষণ মানেই অনেক সময়, পূর্বেও তা দেখা গেছে।’ কিলিয়ান এমবাপ্পে বলেছেন, ‘আমাদের শেষ মিনিট পর্যন্ত বিশ্বাস রাখতে হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল য় ন এমব প প ক মব য ক এমব প প আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে একের পর এক অঘোষিত ভাগাড়, বর্জ্য ফেলে পরিবেশদূষণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়াতলী এলাকা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই এলাকায় গেলে দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে চোখে পড়ে সারি সারি ময়লার স্তূপ। মহাসড়কের পাশ যেন হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে।

শুধু হাড়াতলী এলাকাই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে এমন অঘোষিত ভাগাড় গড়ে উঠেছে। মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার অংশ। এর মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে তাদের সংগ্রহ করা ময়লা ফেলছে। এতে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তে, মহাসড়ক পরিণত হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে। এভাবে পরিবেশদূষণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজটা কী? মানুষ তো ট্যাক্স দেয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা একধরনের অপরাধও। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার।

হাড়াতলী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে স্থানটিতে ময়লা ফেলা শুরু করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এরপর সেটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় ভাগাড়ে। দিন যত গেছে, ময়লা ফেলার জায়গাটির আকার ততই দীর্ঘ হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে হেঁটে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের বসবাসকারীরা। ভাগাড়ের আশপাশে অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল।

এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে।মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব, উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা ফেলতে আমরা বারবার বাধা দিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিটি করপোরেশন সবুজে ঘেরা এলাকাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখনো প্রতিদিন ময়লা বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলে, তারা নাকি এখন ময়লা ফেলে না। তাহলে আমাদের প্রশ্ন, ময়লা কারা ফেলছে?’

স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে বসা যায় না দুর্গন্ধের জন্য। একটু বাতাসেই নাকে ভেসে আসে ময়লার দুর্গন্ধ। কলেজে প্রবেশের সময় নাক চেপে ধরে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাড়াতলীতে তিন মাস ধরে তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন না। সিটি করপোরেশনের ফেলা ময়লাগুলো ভেকু দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন রাতের আঁধারে আশপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছে। যারা ময়লা ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রবেশমুখ বালুজুড়ি এলাকায় ময়লার ভাগাড়

সম্পর্কিত নিবন্ধ