রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির গুদাম ধ্বংস
Published: 13th, April 2025 GMT
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি কুসুম-এর একটি গুদাম ধ্বংস হয়ে গেছে। ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট।
ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস দাবি করেছে, কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় কোম্পানি কুসুম-এর গুদামে শনিবার (১২ এপ্রিল) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
আরো পড়ুন:
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের দূতের ৪ ঘণ্টা বৈঠক
গ্যাগারিন বিজ্ঞান উৎসবে রকেট মডেল তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
ইউক্রেনীয় দূতাবাস অভিযোগ করেছে, “রাশিয়া ভারতকে ‘বিশেষ বন্ধু’ বলে দাবি করলেও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তারা কুসুমের তৈরি শিশু ও বয়স্কদের ওষুধগুলো ধ্বংস করেছে।”
ইউক্রেনে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্টিন হ্যারিসও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে রাশিয়া ড্রোন হামলা চালিয়ে কিয়েভের একটি ওষুধ কোম্পানির সম্পূর্ণভাবে গুদাম ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ ছিল। রাশিয়া আবারো ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।”
তবে হ্যারিস এই হামলাটি ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির গুদামে চালানো হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে পাঁচটি হামলা চালিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া স্থগিতাদেশের লঙ্ঘন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতীয় ব্যবসায়ী রাজীব গুপ্তের মালিকানাধীন কুসুম ইউক্রেনের বৃহত্তম ওষুধ কোম্পানিগুলোর একটি। কুসুমের উৎপাদিত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলো সারা ইউক্রেনে বিক্রি হয়। রুশ বাহিনীর হামলায় গুদামে থাকা বিপুল পরিমাণ ওষুধ ধ্বংস হয়েছে।
কোম্পানিটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, কুসুম হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড ১৯৯৭ সালে ভারতের নয়া দিল্লিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সম্পূর্ণ রপ্তানি-কেন্দ্রিক একটি ওষুধ কোম্পানি। কোম্পানিটি ২০০৭ সালে রাজস্থানের ভিওয়াড়িতে একটি ফর্মুলেশন প্ল্যান্ট দিয়ে তার উৎপাদন যাত্রা শুরু করে।
বর্তমানে কুসুম হেলথকেয়ার ২৮টি দেশে কাজ করে, যার মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো, ইউক্রেন, সিআইএস দেশ (যেমন মলদোভা, উজবেকিস্তান এবং কাজাখস্তান), এমইএ দেশ (সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, আইভরি কোস্ট, বেনিন এবং অন্যান্য), ভারত এবং আসিয়ান দেশ (যেমন মঙ্গোলিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ)।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।