রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি কুসুম-এর একটি গুদাম ধ্বংস হয়ে গেছে। ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট। 

ভারতে ইউক্রেনের দূতাবাস দাবি করেছে, কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় কোম্পানি কুসুম-এর গুদামে শনিবার (১২ এপ্রিল) ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

আরো পড়ুন:

পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের দূতের ৪ ঘণ্টা বৈঠক

গ্যাগারিন বিজ্ঞান উৎসবে রকেট মডেল তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ইউক্রেনীয় দূতাবাস অভিযোগ করেছে, “রাশিয়া ভারতকে ‘বিশেষ বন্ধু’ বলে দাবি করলেও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তারা কুসুমের তৈরি শিশু ও বয়স্কদের ওষুধগুলো ধ্বংস করেছে।”

ইউক্রেনে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্টিন হ্যারিসও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে রাশিয়া ড্রোন হামলা চালিয়ে কিয়েভের একটি ওষুধ কোম্পানির সম্পূর্ণভাবে গুদাম ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ ছিল। রাশিয়া আবারো ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।”

তবে হ্যারিস এই হামলাটি ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির গুদামে চালানো হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে পাঁচটি হামলা চালিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া স্থগিতাদেশের লঙ্ঘন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতীয় ব্যবসায়ী রাজীব গুপ্তের মালিকানাধীন কুসুম ইউক্রেনের বৃহত্তম ওষুধ কোম্পানিগুলোর একটি। কুসুমের উৎপাদিত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলো সারা ইউক্রেনে বিক্রি হয়। রুশ বাহিনীর হামলায় গুদামে থাকা বিপুল পরিমাণ ওষুধ ধ্বংস হয়েছে।

কোম্পানিটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, কুসুম হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড ১৯৯৭ সালে ভারতের নয়া দিল্লিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সম্পূর্ণ রপ্তানি-কেন্দ্রিক একটি ওষুধ কোম্পানি। কোম্পানিটি ২০০৭ সালে রাজস্থানের ভিওয়াড়িতে একটি ফর্মুলেশন প্ল্যান্ট দিয়ে তার উৎপাদন যাত্রা শুরু করে।

বর্তমানে কুসুম হেলথকেয়ার ২৮টি দেশে কাজ করে, যার মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো, ইউক্রেন, সিআইএস দেশ (যেমন মলদোভা, উজবেকিস্তান এবং কাজাখস্তান), এমইএ দেশ (সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, আইভরি কোস্ট, বেনিন এবং অন্যান্য), ভারত এবং আসিয়ান দেশ (যেমন মঙ্গোলিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ)।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত

রাজধানীতে অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে পড়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার বনশ্রীর এফ ব্লক সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিন মতিঝিলের ফকিরাপুল মোড়ে প্রাইভেট কারের চাপায় আব্দুল মতিন (৩৬) নামে এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।

বনশ্রীতে নিহত দু’জন হলেন– আব্দুল্লাহ আল নোমান (২১) ও পাভেল মিয়া (২০)। নোমানের মামা আব্দুল হামিদ জানান, নিহতরা পরস্পর বন্ধু। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ঢাকায় ঘুরতে যাওয়ার সময় দু’জন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তারা রূপগঞ্জের নামারমুসুরি এলাকায় থাকতেন। নোমান মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পাভেল তেমন কিছুই করতেন না। এ ঘটনায় নোমানের পরিবারের পক্ষ থেকে সড়ক নিরাপত্তা আইনে খিলগাঁও থানায় মামলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মোটরসাইকেল চালক টিপু সুলতান বলেন, সড়কটি যানবাহনে ঠাসা ছিল। এ কারণে গাড়ি চলছিল ধীরগতিতে। হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পাশ থেকে এসে নোমানের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে দু’জন সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন। পরে মিয়ামি পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দেয়। নোমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। মোটরসাইকেল আরোহী পাভেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরাজী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

খিলগাঁও থানার ওসি দাউদ হোসেন জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। অটোরিকশা চালককেও আটক করা যায়নি। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফকিরাপুল মোড়ে প্রাইভেটকারের চাপায় প্রাণ হারান রিকশাচালক আব্দুল মতিন। তাঁর বাড়ি রংপুরে। তিনি মুগদার মাণ্ডা এলাকায় একটি রিকশার গ্যারেজে থাকতেন। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, প্রাইভেটকারের চালক আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। ময়নাতন্ত শেষে পরিবারের কাছে মতিনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর থানার সিভিল এভিয়েশন কোয়ার্টার গেটের (সি-টাইপ) সামনের ফুটপাত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। বিমানবন্দর থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই যুবকের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।

সড়কে ঝরল আরও ছয় প্রাণ
খুলনার ডুমুরিয়ায় তেলবাহী লরির চাপায় দুই নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলে উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের নরনিয়া মহিলা মাদ্রাসার কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– রোকেয়া বেগম (৫৫) ও রশিদা বেগম (৪৫)।

গতকাল সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে সেলফি পরিবহনের বাসের ধাক্কায় শামসুল হক নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরে গণস্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। সাভার থেকে অবসরের পাওনাদি নিয়ে ফেরার পথে তিনি প্রাণ হারান। শামসুলের বাড়ি চাঁদপুরে। ঘটনার পর গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা সেলফি পরিবহনের পাঁচটি বাস আটক করেন।

এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নয়ন মিয়া (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের রতনদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শান্ত ইসলাম (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল উপজেলার কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শান্ত মথুরাপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের রিপন মণ্ডলের ছেলে। 

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী বাজারে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে ছিটকে পড়ে স্বপন শীল নামে এক স্যালুন ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র বিলি করতে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ