ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ তেঘরিয়া বিটি মাঠের মূল অংশের বাহিরে একদিনের জন্য বৈশাখী মেলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শামসুন নাহার শিলা স্বাক্ষরিত এক পত্রে ১৭টি শর্ত জুড়ে দিয়ে একদিনের জন্য মাঠটিতে মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়। 

এর আগে ১০ এপ্রিল বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা করা হলে মাঠটি নষ্ট হইতে পারে সেই আশঙ্কায় কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বন্ধ করে দেয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি আয়োজিত বৈশাখী মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে এ নিয়ে বিবাদ তৈরি হয় প্রশাসনের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর। 

গতকাল শনিবার দুপুরে তড়িৎগতিতে বিটি মাঠ পরিদর্শনে আসেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নিপুণ রায় চৌধুরী। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে কাফনের কাপড় পরার প্রয়োজন হলেও বিটি মাঠে বৈশাখী মেলা হবেই বলে ঘোষণা দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গয়েশ্বর বৈশাখী মেলা করার চ্যালঞ্জ হিসেবে নিলে উপজেলা প্রশাসন ও বিএনপির মধ্যে মুখোমুখি হয়। পরে বৈশাখী মেলা করতে আবেদন করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী। 

জেলা প্রশাসক ১৭টি শর্ত দিয়ে মেলার অনুমোদন দেওয়া দিয়েছে। শর্তে বিটি মাঠের মূল অংশের বাহিরে মেলা করতে হবে। এক দিনের বেশি মেলা করা যাবে না। এই মেলায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কোনোভাবে সহযোগিতা না করার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে বৈশাখী মেলাটি বিএনপি নিজেরাই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বৈশাখী মেলায় কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা হলে এর দায়ভার বিএনপিকে নিতে হবে।

এ ব্যপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ১৭টি শর্ত জুড়ে বৈশাখী মেলার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে থেকে। এক দিনের জন্য মেলাটি হবে। যেহেতু মেলা আয়োজন নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ থাকবে। এছাড়াও বিএনপির আয়োজক কমিটির সদস্যরা নিরাপত্তা দিবেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, শর্ত সাপেক্ষে এক দিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিটি মাঠ নামে কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। এর কারনেই উপজেলা প্রশাসন অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিটি মাঠ নিয়ে মেলা হওয়াকে কেন্দ্র করে সোস্যাল মিডিয়ায় নানা সমালোচনা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ এপ্রিল মাঠটিতে মেলার অনুমতি বাতিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ ন র জন য ম ল র অন ম ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও