দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ বেড়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রকৃত রিজার্ভ (বিপিএম ৬ অনুযায়ী)। বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রিম করেছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগে গত ২৮ দেশের মার্চ গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
মুখপাত্র বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভের একটি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে; যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পেতে হলে থাকতে হবে। আর তা জুনের মধ্যেই অর্জন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইএমএফের শর্ত পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএমএফের নিয়ম অনুযায়ী জুনে নিট রিজার্ভ থাকতে হবে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা রয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
দেশে মার্চ মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ ৪০ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)। একক মাস হিসেবে যা সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স। আর রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার কারণে রিজার্ভও বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে রিজার্ভ আরো বাড়বে।
মার্চে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রাখায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল। বিশেষ করে ডলারের দাম ১২০-১২৩ টাকায় ছিল। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখে। বিপরীত দিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে। যা রিজার্ভ বাড়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন য য় পর ম ণ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
নিট রিজার্ভও ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুত বা রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭৪১ কোটি ডলার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ২০৪ কোটি ডলার। আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে ২০২৩ সালের আগস্টে রিজার্ভ এখন যে রিজার্ভ আছে, এর সমান ছিল।
২০২৪ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সপ্তাহে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ফলে মোট রিজার্ভ ও নিট রিজার্ভ—উভয়ই বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এর আগে ১৪ এপ্রিল রিজার্ভ বেড়ে হয় ২৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৩৯ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয় ২১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১১ কোটি ডলার।
প্রবাসীদের পাঠানো আয় আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাড়ছে। গত মার্চ মাসে ৩২৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে; এক মাসের হিসাবে যেকোনো সময়ের চেয়ে এটি বেশি। আর চলতি মাসের ২৬ দিনে এসেছে ২২৭ কোটি ডলার। ফলে ব্যাংকগুলো উদ্বৃত্ত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে। ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনলে আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান এলেই রিজার্ভ বাড়ে। এতে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ওপর চাপ কমেছে। ডলারের দাম না বেড়ে ১২২ টাকায় অনেক দিন ধরে স্থির আছে। পাশাপাশি অনেক ব্যাংক এখন গ্রাহকদের চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছে। ফলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক।
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ডলার নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। ৮৫ টাকার ডলার বেড়ে ১২৮ টাকা পর্যন্ত ওঠে। সরকার পরিবর্তনের পর নানা উদ্যোগের কারণে প্রবাসী আয় বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ছে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। ২০২২ সালের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছে অনেক ব্যাংক।