রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো চুক্তির আগে ইউক্রেন দেখে যান
Published: 15th, April 2025 GMT
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যেকোনো চুক্তির আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেন সফরের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান। জেলেনস্কি ট্রাম্পের উদ্দেশে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের সমঝোতার আগে অনুগ্রহ করে ইউক্রেনের মানুষ, বেসামরিক লোকজন, যোদ্ধা, হাসপাতাল, গির্জা ও শিশুদের দেখে যান। খবর-বিবিসি
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমি শহরে রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন ৮৪ জন। রোববার সকালে দুই দফায় সুমি শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এই হামলার আগে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছিল।
সরকারি চ্যানেলগুলোতে হামলার ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সেখানকার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইহোর ক্লাইমেঙ্কো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, হামলায় অন্তত ৮৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাতটি শিশু রয়েছে।
হামলা নিয়ে সুমি শহরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আরতেম কোবজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই উজ্জ্বল পাম সানডেতে আমাদের সম্প্রদায় এক ভয়াবহ বিয়োগান্তক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। দুঃখজনকভাবে আমরা জানতে পেরেছি যে ইতিমধ্যে ৩১ জন নিহত হয়েছেন।’
হামলা নিয়ে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। তিনি বলেন, মানুষ যখন একটি বিশেষ দিনে গির্জায় যাচ্ছিলেন, তখন ভয়াবহ হামলায় অনেকেই হতাহত হয়েছেন।
ইউক্রেনে তিন বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেন—দুই পক্ষেই লাখো মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তাঁদের বেশির ভাগই সেনাসদস্য। এ ছাড়া জাতিসংঘের হিসাবে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী হিসেবে জীবনযাপন করছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।