নেত্রকোণায় বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু
Published: 16th, April 2025 GMT
নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে আলাদা স্থানে বজ্রপাতে তিন কৃষক নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন একজন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ উপজেলার তিনটি গ্রামে বজ্রপাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে খালিয়াজুরীর ইউএনও উজ্জ্বল হোসেন জানান।
নিহতরা হলেন- উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সমর আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (২৫), কৃষ্ণপুর গ্রামের রমজান মিয়ার ছেলে কবীর হোসেন (৪০) ও হায়াতপুর গ্রামের রসিক সরকারের ছেলে রাখাল সরকার (৬০)। আহত রুনু মিয়া (৩০) উপজেলার রসুলপুর গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়দের বরাতে ইউএনও উজ্জ্বল হোসেন বলেন, বিকাল সোয়া ৫টার দিকে রসুলপুর গ্রামে ধনু নদীর পাড়ে হাওর থেকে কেটে আনা ধান গোছানোর সময় বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়ে নিজাম উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় রুনু মিয়া আহত হন। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।
অন্যদিকে, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোড়ল বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির সামনের হাওরে ধান কাটতে গেলে বজ্রসহ বৃষ্টির কবলে পড়েন কবীর হোসেন। তখন বজ্রপাতে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মারা যান তিনি।
এছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওমর চৌধুরী বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হায়াতপুর গ্রামের সামনে হাওর থেকে রাখাল সরকার গরু আনতে যান। এসময় সেখানে বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাখাল সরকার।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, বজ্রপাতে নিহতদের লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।
এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।
মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।
পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।
তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।
পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’
জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।