মিয়ানমারে আটকে পড়া ২০ বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরেছেন। গতকাল মঙ্গলবার তাদের সবাইকে স্বজনদের জিম্মায় হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন। স্বজনদের কাছে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। অবৈধ পথে মালয়েশিয়া ও ইতালি যাওয়ার পথে সাগর থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার নৌবাহিনী। 

গত ১৩ এপ্রিল ২০ বাংলাদেশি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা সমুদ্র অভিযানে করে যাত্রা করেন। তারা গতকাল চট্টগ্রামের বিএনএস ঈশা খান সমুদ্র জেটিতে নামলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করে নৌবাহিনী। পরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে তাদের চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আনা হয় এবং অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.

কামরুজ্জামান বলেন, ‘অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রায়ই দুঃখজনক পরিণতি ডেকে আনে। ফিরে আসা এসব নাগরিকের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সতর্কবার্তা।’ 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা