ভারতের উত্তরাখন্ডের ১৭০টির বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিল রাজ্য বিজেপি সরকার
Published: 17th, April 2025 GMT
নিবন্ধন নেই, এমন অভিযোগে ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের ১৭০টির বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যের কর্মকর্তাদের দাবি, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদ্রাসা বোর্ড বা রাজ্য শিক্ষা বিভাগের নিবন্ধন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। তাই সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলদোয়ানির বনভুলপুরা এলাকায় ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালনা করে। এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ নিবন্ধন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা মেনে চলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিদর্শনকালে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা অনিবন্ধিত পাওয়া গেছে। বেশ কিছু মাদ্রাসা রাজ্য সরকারের নিয়ম লঙ্ঘন করে, যথাযথ নিবন্ধন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই এলাকার সাতটি মাদ্রাসা সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই মাসে ১৭০টির বেশি মাদ্রাসা সিলগালা করে দেওয়া হলো।
উত্তরাখন্ড রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, এ রাজ্যে প্রায় ৪৫০টি নিবন্ধিত মাদ্রাসা রয়েছে। যারা সরকারকে তাদের নথি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং আয়-ব্যয়ের সম্পূর্ণ বিবরণ জমা দেয়ে। কিন্তু ৫০০টির বেশি মাদ্রাসা কোনো স্বীকৃতি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে সরকার, আবেদন শুরু১৫ এপ্রিল ২০২৫এদিকে গত মঙ্গলবার কংগ্রেস বিজেপিশাসিত উত্তরাখন্ড রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে রাজ্যে অনিবন্ধিত মাদ্রাসা বন্ধের জন্য অতিরিক্ত অভিযান চালানোর অভিযোগ করেছে। গত মঙ্গলবার কংগ্রেস উত্তরাখন্ড রাজ্য সরকারের এমন উদ্যোগ একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছে। সংখ্যালঘু তোষণের জন্য বিরোধীদের আক্রমণ করেছে কংগ্রেস।
মঙ্গলবার উত্তরাখন্ড কংগ্রেসের সহসভাপতি সূর্যকান্ত ধাসমানা রাজ্যের মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ‘এটি স্পষ্টতই একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে তৈরি করা হচ্ছে। তারা (সরকার) মেরুকরণের রাজনীতিতে লিপ্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুনফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম, আইইএলটিএসে ৭ স্কোরে বৃত্তির আবেদন৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ য সরক র র কর মকর ত ন বন ধ পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব
পাকিস্তানের ওপর কেউ হামলা চালালে সৌদি আরব তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। আবার সৌদি আরবের ওপর কেউ আগ্রাসন চালালে পাকিস্তানও সৌদি আরবকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। ঠিক এমনই একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সৌদি আরব সফরের সময় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ চুক্তির কথা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’
চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানায় যে, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামিক সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণেই শরিফ সৌদি আরব সফরে গেছেন বলেও তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে এখন ‘এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ বিবেচনা করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে উন্নীত করেছে। তারা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতা, ইসরায়েলের হামলা, দোহা সম্মেলন এবং আরব বিশ্বে সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে, বর্ধিত হুমকির সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।
ঢাকা/ফিরোজ