এএইচএফ কাপে দুর্দান্ত শুরু বাংলাদেশের
Published: 18th, April 2025 GMT
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় শুরু হয়েছে ২০২৫ এএইচএফ কাপ হকির লড়াই। টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে বাংলাদেশের হকি দল ৫-১ ব্যবধানে হারিয়েছে কাজাখস্তানকে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হওয়া ‘বি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে শুরুতে কিছুটা চাপে থাকলেও শেষ দুই কোয়ার্টারে আগ্রাসী হকির প্রদর্শনীতে জয় নিশ্চিত করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যাচসেরা হন সোহানুর রহমান সবুজ।
প্রথম কোয়ার্টারে বাংলাদেশের পক্ষে গোলের দেখা মেলেনি। তবে দ্বিতীয় কোয়ার্টারের ৯ মিনিটে আশরাফুল ইসলাম পেনাল্টি কর্নার থেকে স্কোরলাইন খুলে দেন। ঠিক ছয় মিনিট পরেই কাজাখস্তান পাল্টা গোল করে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনে। দুই কোয়ার্টার শেষে স্কোর ছিল ১-১।
আরো পড়ুন:
অলিম্পিক হকিতে সেমিফাইনালে ভারত
‘মারামারির’ পর আবাহনীর বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও মাঠ ছাড়লো মোহামেডান
তৃতীয় কোয়ার্টারে শুরু হয় বাংলাদেশের দাপট। ৩৮ মিনিটে নাইম উদ্দিনের পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে আবার এগিয়ে নেন। এর এক মিনিট পরেই রাকিবুল হাসান ফিল্ড গোল করে ব্যবধান বাড়ান।
৪৪তম মিনিটে আবারও পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করেন সোহানুর রহমান সবুজ। ফলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-১। ম্যাচের শেষদিকে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে আশরাফুল দ্বিতীয়বারের মতো বল জালে জড়ান। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ৫-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে রোববার, যেখানে প্রতিপক্ষ হবে স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়া। গ্রুপে আরও রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। দুই গ্রুপের সেরা দুই দল পাবে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ এবং একইসঙ্গে নিশ্চিত করবে এশিয়া কাপের টিকিট।
উল্লেখ্য, গত চার আসরের এএইচএফ কাপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এবারও তারা নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখার লক্ষ্যেই মাঠে নেমেছে। কাজাখস্তানের বিপক্ষে এই বড় জয় সেই লক্ষ্যে শক্ত এক পদক্ষেপ।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হক গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি