ঢাকাসহ দেশের কোথায় কোথায় বৃষ্টি হতে পারে আজ
Published: 19th, April 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দিন ধরে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবারও বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রপাত। এই বৃষ্টিতে কমেছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শনিবার রাজধানীসহ দেশের নানা স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। গতকালের চেয়ে আজ বৃষ্টি বাড়তে পারে। তবে আগামীকাল রোববার থেকে এ বৃষ্টি কমে যেতে পারে।
কয়েক দিনের তাপপ্রবাহের পর বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রাক্–মৌসুমি বায়ুর এ সময়ে এমন বৃষ্টি হয় সাধারণত। এর সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আছে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ। এসবের প্রভাবেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টির পরিমাণ গতকাল কিছুটা কমে আসে। রাজধানীর আকাশ সকাল থেকেই মেঘলা ছিল। তবে বৃষ্টি হয়েছে সামান্যই। তবে আজ বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের অনেক স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রপাত। কোথাও কোথাও অবশ্য মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দেশের মধ্যাঞ্চলে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। যদি আমরা ঢাকাকে কেন্দ্র ধরে নিই, তাহলে আশপাশের ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, মাদারীপুর—এসব এলাকায় তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হতে পারে। আর দেশের সব স্থানেই মোটামুটি বৃষ্টি হতে পারে আজ। রংপুর বিভাগের কিছু স্থানে, রাজশাহীর একটি অংশে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের দিকে বৃষ্টি অপেক্ষাকৃত কম হতে পারে।’
এদিকে বৃষ্টির কারণে দেশে কমে গেছে তাপমাত্রা। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় পটুয়াখালীতে ৪৮ মিলিমিটার। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মোংলা ও খেপুপাড়ায়, ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানীর তাপমাত্রা আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। গতকাল এ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক
জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সালিসে আসা এক যুবককে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের মা আনারা বেগম এ কথা জানান।
গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (৩২)। তাঁর বাড়ি নগরের বলাশপুর এলাকায়। মায়ের দাবি, আল-আমিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সালিসে জমিজমার কাগজ ঠিক থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবক যুবলীগের সমর্থক। তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়েকবার বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁকে পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁকে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-আমিনের মা আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে বলাশপুর এলাকায় স্বামীর পেনশনের ১৭ লাখ টাকায় ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জমি কেনেন তাঁরা। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে নিজের কেনা জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ব্যক্তি ও তাঁর পক্ষের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। গত শনিবার রাত আটটায় থানায় সালিস শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সালিসে শেষ পর্যায়ে যখন জমির কাগজপত্র তাঁদের ঠিক পান সালিসকারীরা, তখন ওসি আল-আমিনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পেছনে পেছনে তিনি গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এরপর আল-আমিনকে গারদে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আমার ছেলে ব্যবসা করে। তাকে রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।’
২৭ জুলাই আল-আমিনকে আদালতে পাঠানোর প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশের টহল দল নগরের আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড় সেলফি নামের স্থানে পাকা রাস্তার ওপর একদল সন্ত্রাসী জনতাবদ্ধ হয়ে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরা, ২৫টি কাচের টুকরা জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ২৬ জুলাই রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ আল-আমিনকে যুবলীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে।
থানার ওই সালিসে থাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. বাবু বলেন, থানা চত্বরের একটি ঘরে এসআই সজীব কোচের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র বোঝেন, এমন লোকজন নিয়ে সালিস শুরু হয়। একপর্যায়ে আল-আমিনকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে থানা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিন আগে থেকে দারোগারা তাঁকে (আল-আমিন) ধরার জন্য খুঁজতেছে। ডেভিল হান্টের আসামি সে। আমাদের দুই দারোগা ছয় থেকে সাতবার তাঁর বাড়িতে রেড দিছে। সে যুবলীগের ফ্যাসিস্ট। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।’ ওসি বলেন, কোনো কাগজপত্র দিয়ে নোটিশ করে তাঁকে থানায় ডাকা হয়নি। বিচারক যদি মনে করে আমরা তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যারেস্ট করেছি, তাহলে আদালত ফাইন্ডিংস দেবেন। আসামিকে থানা থেকে গ্রেপ্তার করা কী নিষেধ আছে?’ আদালতের প্রতিবেদনে ভিন্ন স্থান দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জজ এটার বিচার করবে। যদি এমন কইরা থাকে, সমস্যা কী?’