দুদকের তদন্ত নিয়ে বিসিবি সভাপতি: কোথা থেকে কী বেরিয়ে আসবে বলতে পারছি না
Published: 19th, April 2025 GMT
হঠাৎ করেই গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) গিয়েছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা। আগে না জানিয়ে তাঁদের আকস্মিক আগমনে কিছুটা হলেও হকচকিয়ে গিয়েছিলেন বিসিবি কর্তারা। সেই সময় দেশে ছিলেন না সভাপতি ফারুক আহমেদ। আইসিসির সভা শেষে তিনি সেদিন রাতেই দেশে ফিরেছেন।
রাজধানীতে আজ শিশুদের একটি খেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে বিসিবিতে দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। যেখানে দুদককে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা বলেছেন ফারুক, ‘যেদিন দুদক বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে, সেদিন রাতেই আমি দেশে ফিরেছি। আমার মনে হয়েছে, তারা কারও নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে এসেছে। বোর্ড হিসেবে আমরা সর্বাত্মকভাবে তাদের সহযোগিতা করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সিইওকে বলে দিয়েছি, তারা যেসব নথিপত্র চেয়েছে, সেগুলো দিয়ে সহযোগিতা করতে। সিইও ইতিমধ্যে সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।’
তবে দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি ফারুক, ‘তদন্ত কর্মকর্তারা যেকোনো তথ্য বা কাগজপত্র চাইলেই তা যেন দেওয়া হয়, আমি সেই নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি। তাদের অনুসন্ধান কতদূর এগিয়েছে বা কতদিন চলবে, তা নির্দিষ্ট করে এখনই বলা যাচ্ছে না। কোথা থেকে কী বেরিয়ে আসবে, তাও বলতে পারছি না। তবে তদন্ত চলুক।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে পাতানো ম্যাচ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেছেন, ‘এবার ঘরোয়া ক্রিকেটে পাতানো ম্যাচ খেলার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। পুরোপুরি অবশ্য বন্ধ হয়নি। কিছু টিম বাছাইপর্বে দুটি করে দল তুলেছে। তারা কী উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করেছে? তদন্ত করে বোঝার চেষ্টা করছি, কোথায় কোথায় দুর্নীতি থাকতে পারে। কিছু পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব আমরা।’
আরও পড়ুনবিসিবিতে হঠাৎ দুদক, তিন বিষয়ে তদন্ত১৫ এপ্রিল ২০২৫পাতানো খেলার দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব বোঝাতে ফারুক এরপর যোগ করেন, ‘পাতানো খেলা থাকলে আপনি কখনোই ভালো খেলোয়াড় পাবেন না। আপনি সেরা ব্যাটারকে বলবেন ডাক করে আউট হতে, সেরা বোলারকে বলবেন ওয়াইড বা নো বল দিয়ে উইকেট না নিতে। এটা তো খেলা না। আমরা এটা বন্ধ করতে চাই। একটা টেকনিক্যাল কমিটি আছে। তদন্ত হবে, তদন্তে যদি কোনো অপরাধ বা অনিয়ম প্রমাণিত হয়। তাহলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সীমান্ত এলাকা থেকে যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার
পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাড়ি থেকে রাজু ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওই সীমান্তে বিএসএফের গুলির কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় সদর থানা-পুলিশ। নিহত রাজু ইসলামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ঝুলিপাড়া এলাকায়। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, রাজু গতকাল শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলেন। এরপর তিনি কখন বাইরে গেছেন, স্বজনদের কেউ জানেন না। রাত তিনটার দিকে তাঁকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ঘুম থেকে উঠে আহত অবস্থায় তাঁকে দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দেবীগঞ্জ উপজেলার কাছাকাছি গেলে তিনি মারা যান। পরে লাশ বাড়িতে আনা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, প্রথম দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজু স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেছেন। পরে তিনি গিয়ে দেখেন, তাঁর দুটি পায়ের হাঁটু ও আশপাশে গুলির চিহ্ন। ভারত সীমান্তে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে তিনি মারা গেছেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। কারণ, তাঁর পায়ে স্পষ্ট গুলির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি জানাজানির পর বাড়িতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে ওই এলাকায় বিজিবির দুটি টহল দল দায়িত্বরত ছিল। তখন সীমান্তে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএসএফও গুলি করেনি বলে জানিয়েছে। এমনকি পরিবার থেকে প্রথম দিকে তাঁদের জানানো হয়, তিনি হৃদ্রোগে মারা গেছেন। তবে তিনি যে আহত হয়েছেন, সেটা সীমান্ত এলাকায় হয়েছেন নাকি বাংলাদেশের ভেতরে হয়েছেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শইমী ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের দুই পায়ে গুলির চিহ্ন আছে, সেটি তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। তবে গুলি কারা করেছে বা কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।