রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আশুগঞ্জের যুবক নিহতের খবর, পরিবারে কান্না
Published: 19th, April 2025 GMT
রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সহযোদ্ধার বরাত দিয়ে ওই যুবকের পরিবার জানিয়েছে, যে স্থানে সেখানে নিহত হয়েছে, সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।
জানা যায়, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন হোসেনপুর গ্রামের মো.
শনিবার দুপুরে নিহত আকরামের বাড়ি গিয়ে প্রায় ১০০-১৫০ গজ দূর থেকে কান্না শোনা যায়। বাড়ির সামনে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী বাবা মোরশেদ মিয়াকে শান্তনা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করছেন। তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে স্বাভাবিক কথা বলছেন। পরক্ষণে ছেলের কথা বলে হাউ-মাউ করে কেঁদে চলছেন। পাশে দাদা মো. শহীদ মিয়াও নাতির কথা বলে কাঁদছেন।
আকরামের ঘরে গিয়ে দেখা গেছে, ভাতিজার ছবি হাতে নিয়ে বিলাপ করছেন ফুফু রেশমী বেগম। আকরামের মা মোবিনা বেগম চুপ করে বসে আছেন। তার চোখ-মুখ লাল। ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলে বিলাপ শুরু করেন, ‘আমার বাবার আর ঘুম ভাঙল না।’
বাবা মোরশেদ মিয়া জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। তখন পরিস্থিতি ভালো নয় বলে জানায়। সবার কাছে মাফ চায়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধার পর রাশিয়া থেকে এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম গত সোমবার নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা তখন মরদেহ দেখতে চাইলে তা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে বলেন, ‘যে স্থানে আকরাম নিহত হয়েছে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি আরো জানান, শনিবার বিকেলে সহযোদ্ধা ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাসিন্দা মিরাজ জানিয়েছেন, লাশ ট্র্যাক (অবস্থান সনাক্ত) করা গেছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অবস্থান করায় কাছাকাছি যাওয়া যাচ্ছে না।
লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. শামীম চৌধুরি জানান, এ ধরনের মৃত্যু কারো কাম্য নয়। নিহতের লাশ দেশের আনার ব্যবস্থা, দরিদ্র পরিবারটির ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া জানান, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছে মন্ত্রণালয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন র সহয দ ধ আকর ম র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।