বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সিলেটে নিহত চারজন এখনও শহীদের মর্যাদা পাননি। প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের কাছে ধরনা দিয়েও এ বিষয়ে প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। এদিকে ছেলের শহীদী মর্যাদার দাবিতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন আবদুন নুর বিলাল নামে এক ব্যক্তি। আদালত বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সিলেট জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। 
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত ১৬ এপ্রিল সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এতে চিঠি প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘শহীদ’ মর্যাদার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে জেলা প্রশাসককে আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে প্রাণ হারান ১৬ জন। গত ১ জানুয়ারি শহীদ ও আহতদের প্রথম ধাপের তালিকা প্রকাশ করে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। প্রথম তালিকায় থাকা ৮২৬ শহীদের মধ্যে সিলেট জেলার ১২ জন তালিকাভুক্ত হন। তারা হলেন– সানি আহমেদ, নাজমুল ইসলাম, হাউশ উদ্দিন, মিনহাজ আহমদ, হাফেজ পাবেল আহমদ কামরুল, তাজউদ্দিন, জয় আহমেদ, তারেক আহমদ, রায়হান উদ্দিন, ময়নুল ইসলাম, আবু তাহের মো.

তুরাব ও রুদ্র সেন। 
শহীদ তালিকায় নাম ওঠেনি সিলেটের গোয়াইনঘাটে নিহত নাহেদুল, রাহিম, সুমন ও সিলেট মহানগরীর পঙ্কজ কুমার করের। নিহত ওই চারজনের নাম শহীদের তালিকায় ওঠাতে গত আগস্টের পর থেকে প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কাছে ধরনা দিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। নিহত ওই চারজনকে ‘ভিন্নভাবে’ উপস্থাপন করে তাদের ‘শহীদ’ মর্যাদার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী নেতারা।

গত ৬ অক্টোবর সিলেট জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের শহীদী মর্যাদা দেওয়ার বিষয় নিয়ে এক সভা হয়। ওই সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, গোয়াইনঘাট উপজেলার যে তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে তারা শহীদ হওয়ার তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য নয়। কারণ তারা ৫ আগস্ট গোয়াইনঘাটের সোনারহাট সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্পে হামলা ও আক্রমণ চালাতে গিয়ে নিহত হন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহীদুল ইসলামের অনুসন্ধানেও একই তথ্য পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষের ওই বৈঠকের রেজল্যুশনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। 
জানা গেছে, সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর শহীদের স্বীকৃতি চেয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার নিহত সুমন মিয়ার বাবা আবদুন নুর বিলাল ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর, নাহেদুল ইসলামের বাবা উসমান মিয়া ও সিয়াম আহমদ রাহিমের চাচা আমিনুল ইসলাম ২০ জানুয়ারি এবং নগরীর ঝালোপাড়ার বাসিন্দা নিহত পঙ্কজ কুমারের বাবা নিখিল চন্দ্র কর ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবেদন করেন। 
গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের ফেনাইকোনা গ্রামের আবদুন নুর বিলালের ছেলে সুমন মিয়া। তিনি স-মিলের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন। ৫ আগস্ট সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে বিজিবি সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারান সুমন। পরে ছেলের শহীদের স্বীকৃতির জন্য উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন সুমনের বাবা আবদুন নুর বিলাল। 
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি শেষে আদালত জানান, পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, আদালত এই মুহূর্তে কোনো রুল ইস্যু করতে আগ্রহী নয়। এ বিষয়ে ন্যায়বিচার যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে জেলা প্রশাসককে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। 
আদালতের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ য ত থ ন আবদ ন ন র ব ল ল গ য় ইনঘ ট ল ইসল ম ত র জন ব ষয়ট আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বাসের ধাক্কায় জকির আহমদ জেকি (৪০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত জকির আহমদ জেকি হোয়াইক্যং হোয়াব্রাং এলাকার মৃত নাগু সওদাগরের ছেলে।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

তিনি জানান, ‘পালকি পরিবহন’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হ্নীলা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের সামনে চলে আসে। এতে মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ে। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের লবণ মাঠে উল্টে যায়। সেসময় স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হ্নীলা ও টেকনাফের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জকির আহমদ জেকি মারা যান। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হোয়াইক্যং নয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

সালাহউদ্দিন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “মোটরসাইকেলটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। হ্নীলা স্টেশন থেকে হোয়াব্রাংয়ের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের সামনে ঢুকে পড়ে, মুহূর্তেই বাসটি উল্টে যায়।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, হ্নীলা-টেকনাফ সড়কে বেপরোয়া গতিতে যান চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। এ জায়গায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা/তারেকুর/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীর দক্ষিণখানে নিজ বাসা থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
  • নির্বাচনের আগে একটি দল জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১