চারজনের ‘শহীদ’ মর্যাদার ভাগ্য জেলা প্রশাসকের হাতে
Published: 24th, April 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সিলেটে নিহত চারজন এখনও শহীদের মর্যাদা পাননি। প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের কাছে ধরনা দিয়েও এ বিষয়ে প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। এদিকে ছেলের শহীদী মর্যাদার দাবিতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন আবদুন নুর বিলাল নামে এক ব্যক্তি। আদালত বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সিলেট জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত ১৬ এপ্রিল সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এতে চিঠি প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘শহীদ’ মর্যাদার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে জেলা প্রশাসককে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে প্রাণ হারান ১৬ জন। গত ১ জানুয়ারি শহীদ ও আহতদের প্রথম ধাপের তালিকা প্রকাশ করে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। প্রথম তালিকায় থাকা ৮২৬ শহীদের মধ্যে সিলেট জেলার ১২ জন তালিকাভুক্ত হন। তারা হলেন– সানি আহমেদ, নাজমুল ইসলাম, হাউশ উদ্দিন, মিনহাজ আহমদ, হাফেজ পাবেল আহমদ কামরুল, তাজউদ্দিন, জয় আহমেদ, তারেক আহমদ, রায়হান উদ্দিন, ময়নুল ইসলাম, আবু তাহের মো.
শহীদ তালিকায় নাম ওঠেনি সিলেটের গোয়াইনঘাটে নিহত নাহেদুল, রাহিম, সুমন ও সিলেট মহানগরীর পঙ্কজ কুমার করের। নিহত ওই চারজনের নাম শহীদের তালিকায় ওঠাতে গত আগস্টের পর থেকে প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কাছে ধরনা দিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। নিহত ওই চারজনকে ‘ভিন্নভাবে’ উপস্থাপন করে তাদের ‘শহীদ’ মর্যাদার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী নেতারা।
গত ৬ অক্টোবর সিলেট জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের শহীদী মর্যাদা দেওয়ার বিষয় নিয়ে এক সভা হয়। ওই সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন, গোয়াইনঘাট উপজেলার যে তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে তারা শহীদ হওয়ার তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য নয়। কারণ তারা ৫ আগস্ট গোয়াইনঘাটের সোনারহাট সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্পে হামলা ও আক্রমণ চালাতে গিয়ে নিহত হন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহীদুল ইসলামের অনুসন্ধানেও একই তথ্য পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষের ওই বৈঠকের রেজল্যুশনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর শহীদের স্বীকৃতি চেয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার নিহত সুমন মিয়ার বাবা আবদুন নুর বিলাল ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর, নাহেদুল ইসলামের বাবা উসমান মিয়া ও সিয়াম আহমদ রাহিমের চাচা আমিনুল ইসলাম ২০ জানুয়ারি এবং নগরীর ঝালোপাড়ার বাসিন্দা নিহত পঙ্কজ কুমারের বাবা নিখিল চন্দ্র কর ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর আবেদন করেন।
গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের ফেনাইকোনা গ্রামের আবদুন নুর বিলালের ছেলে সুমন মিয়া। তিনি স-মিলের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন। ৫ আগস্ট সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে বিজিবি সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারান সুমন। পরে ছেলের শহীদের স্বীকৃতির জন্য উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন সুমনের বাবা আবদুন নুর বিলাল।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি শেষে আদালত জানান, পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, আদালত এই মুহূর্তে কোনো রুল ইস্যু করতে আগ্রহী নয়। এ বিষয়ে ন্যায়বিচার যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে জেলা প্রশাসককে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
আদালতের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ য ত থ ন আবদ ন ন র ব ল ল গ য় ইনঘ ট ল ইসল ম ত র জন ব ষয়ট আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে আসতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট, কী ব্যবসা করে তারা
চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। আজ (সোমবার) তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশে বিগ টেক জায়ান্ট আসার যাত্রাটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরেই শুরু হলো। এভাবে আসবে আরও অনেকেই।
চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একই পোস্টে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ প্রসঙ্গে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, ‘আজ আমরা চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসেছি। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।’
অসাইরিস গ্রুপও বাংলাদেশে আসছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার হবে বাংলাদেশি ডাটা ও ক্লাউড কোম্পানি যাত্রার হাত ধরে। এখানে হচ্ছে বিগ জায়ান্টদের জন্য বিশ্বমানের সিকিউরড ক্লাউড সে-আপ, যেখানে আসতে পারে মেটা, গুগলের পেলোড। এমন অভাবনীয় সব উপহার বাংলাদেশকে দিতে চলছেন অধ্যাপক ইউনূস।
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় চীনের শেনজেনে অবস্থিত।
আরও পড়ুনবাংলাদেশের গেমশিল্পের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী চীনের টেনসেন্ট২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব