রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় আজ শুক্রবার একটি গাড়িতে বিস্ফোরণে দেশটির ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক নিহত হয়েছেন। মস্কো প্রশাসনিক অঞ্চলের বালাশিখা শহরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের প্রধান অপারেশন ডিরেক্টরেটের উপপ্রধান ছিলেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে মস্কোয় বা রাশিয়ার অন্যান্য শহরে দেশটির সামরিক কর্মকর্তাদের নিশানা করে হামলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব ইউক্রেনের একটি রুশপন্থী আধা সামরিক গোষ্ঠীর নেতা আরমেন সারগসিয়ান উত্তর-পশ্চিম মস্কোর একটি আবাসিক ভবনের প্রবেশপথে বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন। পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সেই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।

২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর রুশ জেনারেল ইগর কিরিলোভ মস্কোয় নিজের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের বাইরে একটি বৈদ্যুতিক স্কুটারে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে মারা যান। তিনি রাশিয়ার রেডিয়েশন, কেমিক্যাল ও জৈবিক সুরক্ষাবাহিনীর প্রধান ছিলেন।

ইউক্রেনের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তখন তারা বলেছিল, মস্কোর একটি আবাসিক ব্লকের বাইরে এক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তার হত্যার পেছনে তাদের হাত ছিল।

এর কিছুদিন আগে মস্কোর কাছাকাছি এক জঙ্গলে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ক্ষেপণাস্ত্রবিজ্ঞানী মিখাইল শাটস্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়াপন্থী ইউক্রেনের সাবেক এমপি ইলিয়া কিভাকে মস্কোর বাইরে একটি পার্কে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ওই বছরের এপ্রিলে সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি ক্যাফেতে এক অনুষ্ঠানে রুশপন্থী যুদ্ধব্লগার ভ্লাদলেন তাতারস্কি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। অনুষ্ঠানে তাঁকে একটি ছোট ভাস্কর্য উপহার দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই বোমা লুকানো ছিল।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কো বা রাশিয়ার অন্যান্য স্থানে যেসব গুপ্তহত্যা হয়েছে, নীতিগত কারণে ইউক্রেন সেগুলোর দায় স্বীকার করে না। তবে সেসব হামলার সঙ্গে তাদের স্বার্থ যে জড়িত, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র একট

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ