এবার বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের তৈরি ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী এসিসি ব্র্যান্ডের এসি কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন খুলনার খালিশপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ি মিঠুন দত্ত। তিনি পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা। দেশব্যাপী চলমান ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর আওতায় কিস্তিতে এসি কিনে ১০ লাখ টাকা পাওয়ায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে মিঠুন দত্তের পরিবার। 

এর আগে চলতি সিজনে ওয়ালটনের ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন ফরিদপুরের কলেজ শিক্ষার্থী রাসেল ফকির, নেত্রকোনার খোকন মিয়া, রাজধানীর শনির আখড়ার আলী মর্তুজা ও সিলেটের কানাইঘাটের কাওসার আহমেদ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল, ২০২৫) বিকেলে খুলনার খালিশপুরে চিত্রালী শ্রমিক ময়দানে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে মিঠুন দত্তের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান, চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ এবং ওয়ালটন প্লাজার চিফ সেলস এক্সিকিউটিভ অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান তানভির।

আসন্ন ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে ‘দেশজুড়ে তোলপাড়, ওয়ালটন পণ্য কিনে হতে পারেন আবারো মিলিয়নিয়ার’ স্লোগানে সারা দেশে চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২। এর আওতায় চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন অথবা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ। এছাড়াও আছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার।

ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর আওতায় মিঠুন দত্ত গত ১৬ এপ্রিল খালিশপুর ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় ৯৫ হাজার ৯৯০ টাকা দামের দুই টনের এসিসি ব্র্যান্ডের একটি এসি কেনেন। এসি কেনার পর তার নাম, মোবাইল নম্বর এবং ক্রয়কৃত এসির মডেল নম্বর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এরপর তার মোবাইলে ওয়ালটন থেকে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার একটি মেসেজ যায়।  

চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মিঠুন দত্ত জানান, মেসেজ পেয়ে প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে ওয়ালটন থেকে ফোন করে জানালে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হন।

তিনি বলেন, “ওয়ালটন এসি কিনে ১০ লাখ টাকা পাব, এটা কোনোদিন কল্পনাও করিনি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সাধারণ ক্রেতাদের এমন বিশাল সুবিধা দেওয়া ওয়ালটনের সেবামূলক ও মহৎ উদ্যোগ। এতে ক্রেতাদের মধ্যে দেশি পণ্যের প্রতি আগ্রহ ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে আমার হাতে ১০ লাখ টাকা তুলে দিল ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। এ টাকা দিয়ে জমি কিনব।”

ওয়ালটনের সিএমও জোহেব আহমেদ বলেছেন, ওয়ালটন শুধু ব্যবসা করে না। মানুষের মুখে হাসিও ফোটাতে চায়। ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশত গ্রাহক মিলিয়নিয়ার হয়েছেন। পুরস্কারের এসব অর্থে ইতোমধ্যেই অনেক সাধারণ মানুষের জীবন আমূল বদলে গেছে। এভাবেই ওয়ালটন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। 

অনুষ্ঠানে আমিন খান বলেন, গ্রাহকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি দেশীয় পণ্য কেনায় আগ্রহী করে তুলতে ওয়ালটন দেশব্যাপী ডিজিটাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে। ওয়ালটন এখন বাংলাদেশের একটি গর্বের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ ও আস্থা অর্জনের পাশাপাশি বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। 

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন—ওয়ালটন প্লাজার চিফ ডিভিশনাল অফিসার নুরুল ইসলাম ও আল মাহফুজ খান, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার আব্দুল হান্নান, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার রাজীব ফেরদৌস, এসির ব্র্যান্ড ম্যানেজার খলিলুর রহমান, এসি সেলস মনিটরিংয়ের শাহরিয়ার আলম ও খালিশপুর ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজার রবিন মিয়াসহ ওয়ালটনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।

ঢাকা/একরাম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড জ ট ল ক য ম প ইন ১০ ল খ ট ক অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ