হত্যাচেষ্টা মামলার আসামির তালিকায় সুবর্ণা মোস্তফা, অপু বিশ্বাসসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম
Published: 29th, April 2025 GMT
এবার জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ের ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি হয়েছেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তারসহ ১৭ অভিনয়শিল্পী। গতকাল সোমবার আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
ঢাকার ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আজ মঙ্গলবার আদালতের আদেশের কপি তাঁরা পেয়েছেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত মাসে (মার্চ) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করেন এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি। আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানায় এই আবেদন এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক। আজ বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের তালিকায় মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ফারিয়া, জায়েদ খান, আশনা হাবিব ভাবনা, আজিজুল হকের নাম রয়েছে।
পরিদর্শক সুজন হক বলেন, মামলায় ১৭ জন অভিনয়শিল্পীর নাম রয়েছে। থানায় এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ হলে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
সম্প্রতি অভিনেতা ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলমকে (শ্রাবণ) হত্যার অভিযোগে এ মামলা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান