এপ্রিলজুড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে আলোচিত নাম তাওহিদ হৃদয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে মোহামেডানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক যে বিতর্কের জন্ম দেন, তা আক্ষরিক অর্থেই তোলপাড় সৃষ্টি করে।

এর জেরে জল গড়ায় অনেক দূর। একবার হৃদয়কে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি দেওয়ার পর পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে আবার বাড়ানো হয়। ২৬ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আরেক কাণ্ড করে বসেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। আউট হওয়ার পর তাঁকে অসন্তোষ প্রকাশ করে কিছু একটা বলতে শোনা যায়। ম্যাচ শেষে হৃদয়কে শুনানির জন্য ডাকা হলেও তিনি যাননি। ফলে ম্যাচ রেফারি তাঁকে ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

মোট ডিমেরিট পয়েন্ট ৮ হওয়ায় বিসিবির আচরণবিধি অনুসারে হৃদয়কে নতুন করে ৪ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। এর সঙ্গে আগের ১ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা তো ছিলই।

নিষিদ্ধ হৃদয় ২৬ এপ্রিলের পর তাই আর মাঠে নামতে পারেননি। তাঁর দল মোহামেডানও শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত পারেনি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সুপার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী।

রানার্সআপ হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার পর গত কয়েক দিনের ঘটনাবহুল সময় নিয়ে আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হৃদয়। ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিনি নাকি অনেক কিছু লিখতে চেয়েও পারছেন না।

স্ট্যাটাসে হৃদয় লিখেছেন, ‘প্রতিটি গল্পের দুটি দিক থাকে। হয়তো একপক্ষের চাপে অপরপক্ষকে আমাদের কখনো জানার সুযোগ হয় না। তাই ঢালাওভাবে সবটা না জেনেই আমরা কিছু করে বসি বা বলে ফেলি। একদম শুরু থেকে যদি সবটাই বলতে পারতাম, তাহলে কাহিনি হতো ভিন্ন। যেটা বলতে পারছি না, কেন পারছি না, তা না হয় পরেই বলব!’

সব শাস্তি কীভাবে মেনে নিয়েছেন, সেই সম্পর্কে হৃদয় লিখেছেন, ‘নিজেদের ভেতর অনেক কিছুই হয়। বড়-ছোট সবাই ভুল করে, পরিবারের অপর মানুষটা যেন ছোট বা অপমানিত না হয়, সে জন‍্য অনেক কিছু নিজের ঘাড়ে নিতে হয়, আবার সহ‍্য করতে হয়—হোক সেটা অপমান কিংবা ভালোবাসা। এগুলো মিলেই জীবন। আপাতত এটাই বুঝিয়েছি নিজেকে।’

টুর্নামেন্টের এই মৌসুমে মোহামেডানকেই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে বলে মত হৃদয়ের, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগে ২২ গজের বাইরেও এক প্রকার অলিখিত যুদ্ধ করে গেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর কোনো দলকে এতটা মানসিক যুদ্ধ করতে হয়নি, যতটা মোহামেডান করেছে।’

ফেসবুক স্ট্যাটাসের শেষ ভাগে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হৃদয়, ‘মোহামেডান কর্তৃপক্ষ প্রত‍িটি ম‍্যাচে আমাকে উপস্থিত রাখার জন‍্য যে চেষ্টা করেছেন, তার জন‍্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার সতীর্থ খেলোয়াড়, শ্রদ্ধেয় কোচ ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ভালোবাসা।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ