প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি কর্মসূচির বিনিময় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সম্মত হয়েছেন।

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলনুর মাম্মাদভ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি এই বিষয়ে সম্মত হন।

প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় আজারবাইজানের দূতাবাস খোলা এবং ঢাকা ও বাকুর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরো পড়ুন:

পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরে প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আজারবাইজান একটি দূরবর্তী দেশ।”

তিনি বলেন, “দেশটিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে একটি সরাসরি ফ্লাইট থাকলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা জ্বালানি খাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে এবং আজারবাইজানি শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাত থেকে শিখতে আগ্রহী হবে।”

অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ঢাকায় দূতাবাস খোলা হলে ভিসা প্রাপ্তির জটিলতাও দূর হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে আপনাদের উপস্থিতি বাড়ানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়।”

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা গত নভেম্বর মাসে বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন।

তিনি কপ-২৯ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন করার জন্য আজারবাইজান সরকারকে অভিনন্দন জানান।

তিনি অনুরোধ করেন বাকুতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ যেন একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পাঠান।

প্রধান উপদেষ্টা আজারবাইজানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের বিপুল মানবসম্পদ কাজে লাগানোর সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমরা আপনাদের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে সম্ভাবনাগুলো অন্বেষণ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমাদের জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি, যার অর্ধেকই তরুণ। তাই আপনি যদি এখানে কোনো শিল্প স্থাপন করেন, শ্রমিকের কোনো ঘাটতি হবে না।”

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তাদের দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, কারণ দুই বছর পর ঢাকা-বাকু কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩৫ বছর পূর্তি হবে।”

উপমন্ত্রী মাম্মাদভ বলেন, “আমরা আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এখানে এসেছি।”

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে আজারবাইজানের আসান এবং ডোস্ট মডেলের সারাংশ তুলে ধরেন, যা দুর্নীতি হ্রাস এবং জনসেবায় দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করে।

প্রধান উপদেষ্টা আসান এবং ডোস্ট সেবার ধারণার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে এ প্ল্যাটফর্মগুলো প্রয়োগের সম্ভাবনা অনুসন্ধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৫ সালের জুলাই মাসে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিতব্য ইকোনমিক কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ