বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
Published: 1st, May 2025 GMT
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ কর ন বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের যে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তামিম
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে সাকিব আল হাসানের একটি সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন এই সাবেক অধিনায়ক। সমকালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তামিম পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, তিনি কোনো ম্যাচ ‘বেছে বেছে’ খেলতে চাননি এবং সাকিবের কথায় কিছু ভুল তথ্য ছিল।
সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘সে তার মতামত দিয়েছে। কিছু ভুল তথ্য দিয়েছে। ওখানে সাকিব একটা কথা বলেছে—আমি বেছে বেছে ম্যাচ খেলতে চেয়েছি। এটা সে কোথায় পেয়েছে? ফিজিও বলেননি, নির্বাচকরা বলেননি, আমিও বলিনি।’ তামিম আরও জানান, এমন মন্তব্য শুনে তিনি কষ্ট নয়, বরং বিস্মিত হয়েছিলেন।
তামিম বলেন, যদি কোনোদিন সাকিবের সঙ্গে আড্ডায় বসা হয়, তাহলে তিনি বিষয়টি জানতে চাইবেন তার কাছ থেকে।
তবে শুধু সাকিবের কথাতেই নয়, বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তামিম। তিনি বলেন, ‘সাকিব আর আমার ঝামেলার কথা মিডিয়া অনেক আগে থেকেই জানত। খেলায় প্রভাব না পড়ায় কেউ লিখেনি। কিন্তু বিসিবি সভাপতি প্রকাশ্যে বলে দেওয়ার পর থেকেই মিডিয়ায় এসব লেখা শুরু হয়।’
তামিমের মতে, ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের ঠিক আগে বিষয়টি সামনে এনে এমন ‘ভাঙন’ সৃষ্টি করা হয়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরই নিতে হবে। যদিও এখন তারা পদে নেই বলে এই মুহূর্তে কিছু বলার জায়গা দেখছেন না তামিম।