ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছেছে।

গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

রোববার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এবং বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

আল জাজিরা বলছে, শনিবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে।

পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৫২ হাজার ৪৯৫ জনে পৌঁছেছে বলে শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৭৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ২৭৫ জন আহত হয়েছেন। যার ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৬ হাজার ৩২৫ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ন হত মন ত র ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

শাপলা চত্বরে গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আহ্বান  

২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। 

তিনি বলেছেন, “শাপলা চত্বরে যতজন নিহত হয়েছেন, তাদের সবার হয়ে গণহত্যার জন্য হাসিনার নামে মামলা করতে হবে। এটা আমার প্রথম দাবি। দ্বিতীয় দাবি, বিশ্বের মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”

শনিবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান মাহমুদুর রহমান। 

দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক বলেন, “আমি একটা বিষয়ে অবাক হয়ে যাচ্ছি, হেফাজতের পক্ষ থেকে কেন এত দিনেও সেই দানব ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। আপনারা কেন এখনো মামলা দায়ের করেনি, আমি জানি না।”

তিনি বলেন, “আজকে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। একইসঙ্গে আমি জুলাই বিপ্লবের শহীদদেরও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যার পর এই প্রথম স্বাধীনভাবে কোনো প্রোগ্রাম করতে পেরেছি।”

“আমরা যেহেতু মুসলমান, তাই গাজা ও ভারতের কাশ্মীরে মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালাতে হবে।”

তিনি বলেন, “হেফাজত ইসলাম নারীবাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ড. ইউনূস সরকারের প্রতি আমার প্রশ্ন যে, আপনারা কেন অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করছেন? আমি বলতে চাই, নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছিল এ দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করার জন্য। আপনারা সরকারে বসেছেন যাতে বাংলাদেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে, বাংলাদেশকে ভারতের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করার জন্য।” 

“আমি মনে করি, আপনাদের দায়িত্ব শুধু সেই সংস্কারগুলো করা, যে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে পারবে না। ড. ইউনূস সরকারের প্রতি দেশের একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে আমার অনুরোধ, আপনারা অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করবেন না। আমরা দেখেছি, আপনারা অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করেছেন, যেগুলোর কোনো প্রয়োজনই ছিল না। আপনারা রাষ্ট্রের সময় এবং সম্পদ নষ্ট করছেন। সুতরাং, আমার অনুরোধ, আপনারা এসব কমিশন বাতিল করে দেন। আমাদের এসব কমিশনের প্রয়োজন নেই।”

আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, “আলেম-ওলামাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা নারীবাদ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন থেকে সরে যাবেন না। আমাদের বৃহত্তর লড়াই ভারতের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের বৃহত্তর লড়াই ইসলামের জন্য। তাই, আপনারা এ ছোট বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করবেন ঠিকই, কিন্তু এর পেছনে বেশি সময় দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন থেকে পিছিয়ে যাবেন না। এজন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনারা একটু ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আমি মনে করি, বাংলাদেশের আলেমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।”

ঢাকা/রায়হান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের অবরোধে গাজায় অনাহারে ৫৭ জনের মৃত্যু
  • শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিতে জুতাপেটা নিয়ে বিতর্ক, ভিডিও ভাইরাল
  • সারাদেশে ২৩ মে বিক্ষোভ করবে হেফাজত ইসলাম
  • সারাদেশে হেফাজতের বিক্ষোভ ২৩ মে
  • আ. লীগ নিষিদ্ধসহ ১২ দফা দাবি হেফাজতে ইসলামের
  • হেফাজতের সমাবেশে কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়: উপ-প্রেস সচিব
  • হেফাজতের সমাবেশে কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়: প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
  • শাপলা চত্বরে গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আহ্বান  
  • অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে আবেদন শেষ ৪ মে, আইএলটিএসে ৬.৫ অথবা টোয়েফলে ৮৪ হলে আবেদন