তুরস্কে জেলেনস্কির সঙ্গে শান্তি আলোচনায় থাকবেন না পুতিন
Published: 15th, May 2025 GMT
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আহ্বান সত্ত্বেও দেশটিতে চলমান যুদ্ধ নিয়ে বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি আলোচনায় থাকছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি এই শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে ক্রেমলিনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। খভর-বিবিসি
এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, পুতিন রাজি হলে তিনি নিজে আলোচনায় অংশ নিয়ে তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন। ব্যক্তিগতভাবে এই সাক্ষাৎ নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। গণমাধ্যমগুলো বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আলোচনায় থাকবেন না। যদিও এর আগে পুতিন যোগ দিলে উপস্থিত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন জেলেনস্কি। পুতিন উপস্থিত থাকার শর্তে ইস্তানবুলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা বলেছিলেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া থেকে কে আসছেন আমি তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারপর ইউক্রেনের পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে আসা বার্তা সন্তোষজনক নয়। বুধবার রাতে ভিডিও ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে সবশেষ সরাসরি সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। আর ২০২২ সালের মার্চে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর কিছুদিন পর ইস্তানবুলে শেষবার সরাসরি আলোচনায় বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তখন থেকেই ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। গত এক বছরে রাশিয়ান বাহিনী ধীরে ধীরে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে, বিশেষ করে দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে।
কোনো ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়াই রোববার তুরস্কের বৃহত্তম শহরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান পুতিন। এরপরই জেলেনস্কি জানান, তিনি নিজে সেখানে যাবেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টেও সেখানে যাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। শনিবার কিয়েভে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকের পর ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় পশ্চিমা দেশগুলো। তারপরই পুতিন এই প্রস্তাব দেয়। রোববার ট্রাম্প ইউক্রেনকে প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানানোর পর জেলেনস্কি নিজে সেখানে যাবার কথা জানান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র ত রস ক
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।