আলোচনা ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়া ঠিক হবে না: খেলাফত মজলিস
Published: 15th, May 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া মিয়ানমারে মানবিক করিডর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের জন্য সঠিক হবে না বলে মনে করে খেলাফত মজলিস।
বুধবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এমন আলোচনা উঠে এসেছে। বৈঠকে খেলাফত মজলিসের নেতারা চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। কেননা, এর সঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থ জড়িত আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চলছে বলেও মনে করা হচ্ছে। সে জন্য দায়িত্বশীল পর্যায়ে থেকে সবাইকে আরও পারস্পরিক সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে খেলাফত মজলিস।
ন্যায়বিচারের স্বার্থে ফ্যাসিবাদী দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বর্তমান সরকার ‘যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে বলে মনে করছে খেলাফত মজলিস। দলটির নেতাদের মতে, এখন সময় জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার। শাপলা ‘গণহত্যার’ ঘটনায় কমিশন গঠন করে অবিলম্বে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সেই সঙ্গে দলটি নির্বাচনের জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানায়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কাজী মিনহাজুল আলম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ