ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে চান ইউরোপের চার নেতা
Published: 18th, May 2025 GMT
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ জানিয়েছেন, তিনি এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং পোল্যান্ডের নেতারা সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে চান। ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোনালাপের আগেই তারা এটি করতে চান।
রবিবার সাংবাদিকদের কাছে মার্জ জানান, ভ্যাটিকানে পোপ লিও চতুর্দশের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ভ্যাটিকানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথেও দীর্ঘসময় কথা বলেছেন।
মার্জ বলেন, “আমি মার্কো রুবিওর সাথে কথা বলেছি, আগামীকাল ফোনালাপের বিষয়েও। আমরা একমত হয়েছি যে (পুতিনের সাথে) এই কথোপকথনের প্রস্তুতির জন্য আমরা চার রাষ্ট্রীয় নেতা মার্কিন রাষ্ট্রপতির সাথে আবার কথা বলব।”
চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুদ্ধের “রক্তপাত” বন্ধ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি পুতিন এবং জেলেনস্কির সাথে কথা বলার পরিকল্পনা করেছেন।
মস্কোতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ান সংবাদ সংস্থাগুলোকে নিশ্চিত করেছেন যে পুতিন এবং ট্রাম্পের মধ্যে কথোপকথনের প্রস্তুতি চলছে।
যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে তুরস্কে শুক্রবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। এই বৈঠকে পুতিনের উপস্থিতি দাবি করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তবে পুতিন সেখানে হাজির না হয়ে রুশ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন। বৈঠকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা হয়নি। এর পরেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ বন্ধে তিনি পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হিরু চক্রের কারসাজি তদন্তে দুদকে তথ্য দিয়েছে বিএসইসি
সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক ও বিশিষ্ট শেয়ার ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরুসহ তার সহযোগীদের শেয়ার কারসাজি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ডজনখানেকের বেশি কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হিরু চক্রকে মোট ২০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবুল খায়ের হিরুসহ তার সহযোগীদের শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে অনৈতিকভাবে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করছে দুদক। তাই, সংস্থাটির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এসব তথ্য পাঠিয়েছে কমিশন।
এর আগে আবুল খায়ের হিরুর বিনিয়োগ-সংক্রান্ত অভিযোগের রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি চেয়ে বিএসইসিতে চিঠি পাঠান দুদকের সহকারী পরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাজ্জাদ হোসেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ থেকে হিরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্য দুদকে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভার সময় পরিবর্তন
এর আগে চলতি বছরের ১৩ মে মাসের শেষের দিকে একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে আবুল খায়ের সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি। একইসঙ্গে বিষয়টি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। তার আগে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর একই বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি পাঠিয়েছিল বিএসইসি।
দুদকে পাঠনো বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মো. আবুল খায়ের হিরুর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ- সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির দাখিল করা দুটি প্রতিবেদনের মধ্যে ফরচুন সুজ লিমিটেড-সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি চলতি বছরের গত ৩ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সোনালী পেপার বোর্ড মিলস লিমিটেড-সংক্রান্ত অপর একটি প্রতিবেদনের সত্যায়িত ছায়ালিপি চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আবুল খায়ের এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক এনফোর্সমেন্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তার একটি তালিকা চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। আদেশগুলোর কাগজের পরিমাণ বেশি হওয়ায় শুধু আদেশের অগ্রণী পত্রগুলোর ছায়ালিপি এবং আদেশসমূহের পিডিএফ কপি ই-মেইলের মাধমে প্রেরণ করা হলো।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আবুল খায়ের, তার পরিবারের সদস্য এবং সহযোগীদের নাম উঠে এলেও কারো বিরুদ্ধে তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠিত বিএসইসি আবুল খায়ের ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এমনকি, আবুল খায়েরের ব্যবসায়িক পার্টনার বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও ছাড় দেয়নি বিএসইসি।
আবুল খায়ের হিরু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী। তিনি সরকারি কর্মচারী। বর্তমানে সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক হিসাবে কর্মরত আছেন আবুল খায়ের হিরু। তিনি নিজে এবং সহযোগীদের সঙ্গে মিলিতভাবে বিভিন্ন সময়ে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করেছেন। ফলে, পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থী। পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে কারসাজির কারণে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদেরকে বিভিন্ন সময়ে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।
আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদেরকে ২০২২ সালের ১৯ জুন থেকে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৫ মে পর্যন্ত সময়ে ১৯৪ কোটি ৬ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে বিএসইসি।
আবুল খায়ের হিরুর বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট নম্বরগুলো হলো-১২০১৯৫০০৬২১৬৪৫৩৫, ১২০২৬০০০৭১০৯১১১৬, ১২০৪৫৯০০৬৭৭১২৭৮১, ১২০৫৫৯০০৭১০৯১১১৬, ১২০৫৯৫০০৭১০৯১১১৬, ১৬০৪৫৩০০৬২১৬৪৫৩৫ ও ১৬০৫১১০০৭১০৯১১১৬। তিনি সরকারি কর্মচারী হয়েও বাবা, মা, ভাই, বোন, শ্যালক ও ব্যবসায়িক অংশীজনদের নিয়ে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে করসাজি করেছেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, “সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক আবুল খায়ের হিরুসহ তার সহযোগীদের শেয়ার কারসাজি করে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। তাই, তদন্তের স্বার্থে বিএসইসির কাছে তথ্য চেয়েছে দুদক। সংস্থাটির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়েছে বিএসইসি।
ঢাকা/এনটি/রফিক