অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘এখন তাঁর নামে যদি কেস থাকে, আপনি কী করবেন?...ছেড়ে দিলে আবার আপনি কিন্তু...বলবেন স্যার আপনি ছেড়ে দিছেন...।’

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

গতকাল রোববার নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ সোমবার বেলা সোয়া ১১টার সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তাঁর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

আরও পড়ুননুসরাত ফারিয়া শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার১৮ মে ২০২৫

সচিবালয়ের ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। এক সাংবাদিক বলেন, গতকাল বিমানবন্দর থেকে এক চিত্রনায়িকা গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ সোমবার সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এটার (গ্রেপ্তার) সমালোচনা করেছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য জানতে চান সাংবাদিক।

জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কী করেছেন, তা তিনি জানেন না। এটা যাঁর যাঁর ব্যক্তিগত মত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে করা আরেক প্রশ্নে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যারা অপরাধী, তাদের বিচার অবশ্যই হবে। এই বিচার করাটা এই সরকারের ম্যান্ডেট। দেশের মানুষ এ বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করে। কিন্তু এর বাইরে গিয়ে যদি কোনো মানুষ ভোগান্তি মনে করে.

..।

আরও পড়ুননুসরাত ফারিয়া আদালতে, কারাগারে আটক রাখার আবেদন৪ ঘণ্টা আগে

জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এঁদের ক্ষেত্রে তিনি অনেকবার বলছেন, কেউ যেন ভোগান্তির শিকার না হয়। এই জন্য তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। তাঁরা বলছেন, শুধু দুষ্কৃতকারী যেন আইনের আওতায় আসে এবং শাস্তি ভোগ করে। কোনো একজন নিরীহ লোক যেন কোনো অবস্থায়ই শাস্তি ভোগ যেন না করে। এই ব্যবস্থা তাঁরা অবশ্যই নেবেন।

নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে করা প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তিনি বলতে পারবেন না।

নুসরাত ফারিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন, যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ বিষয়ে করা প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন তাঁর নামে যদি কেস থাকে, আপনি কী করবেন?...ছেড়ে দিলে আবার আপনি কিন্তু...বলবেন স্যার আপনি ছেড়ে দিছেন...।’

আরও পড়ুননুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ৩ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আপন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ