দেশের বৃহৎ হাওর অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে চলমান উড়াল সড়ক প্রকল্প। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের আওতায় তাহিরপুরের মাহরাম নদীর উৎসমুখে নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু। অভিযোগ উঠেছে, এ কাজে ব্যবহার হচ্ছে মাটিমিশ্রিত বালু ও পাথরের মতো মানহীন নির্মাণসামগ্রী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক প্রকল্পের আওতায় ওই এলাকায় দুটি সেতু ও ছয় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৬ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা। প্রকল্পের এই অংশে দুটি সেতু হচ্ছে। একটি মানিগাঁও বিদ্যালয়ের সামনে ১০৫ মিটার। অন্যটি মাহরাম নদীর ওপর নির্মিতব্য ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু।
রোববার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছু চুনাপাথর নদীতে রেখে অবৈধ ক্রাশার মেশিন দিয়ে ভাঙছেন স্থানীয়রা। নদীর অনেক জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে পাথর। কয়েকটি স্তূপের সঙ্গে রয়েছে মাটি। একটি এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু তুলে গাড়িতে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে অপরিচ্ছন্ন পাথর-বালু নেওয়া হচ্ছে ১০৫ মিটার সেতু ও সড়কের কাজে ব্যবহারের জন্য।
স্থানীয়রা বলছেন, নদীতে প্রচুর পরিমাণে বালু থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেগুলো কাজে লাগাচ্ছে। পাশের নদী যাদুকাটা গেল বছর পর্যন্ত ইজারা থাকলেও পহেলা বৈশাখ থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বন্ধ রয়েছে। তবে মাহরাম নদীতে বালু তোলা চলছে। এমন চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে প্রকল্পের কাজের জন্য মাটিমিশ্রিত বালু ও পাথর ব্যবহার করছেন দায়িত্বশীলরা।
যাদুকাটা নদীর উৎসমুখ থেকে উৎপত্তি হয়েছে মাহরাম নদীর। গত কয়েক বছর যাদুকাটা নদী ইজারা হলেও মাহরাম নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। এতে নদীর উৎসমুখ থেকে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে প্রচুর পরিমাণে বালু জমেছে। কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাহরাম নদীর এই বালু ব্যবহার করা হচ্ছে সেতুর কাজে।
মানিগাঁওয়ের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, শুরু থেকে মাটি ও বালুমিশ্রিত পাথর দিয়ে কাজ চলছে। এলাকাবাসী অনেকবার এসে বাধা দিয়েছেন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী যুক্ত থাকায় ঠিকাদারের লোকজন স্থানীয়দের কথা আমলে নিচ্ছেন না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মো.
সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয়দের মাঝে দ্বন্দ্বের কারণে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে। বালু ও পাথর পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিসি ব্যাংকের পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত
বেসরকারি খাতের এনসিসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৫৪৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে পর্ষদ সভাটি হয়।
এনসিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নূরুন নেওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, পরিচালক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, পরিচালক ও প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তানজিনা আলী, পরিচালক সৈয়দ আসিফ নিজাম উদ্দিন, পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চাকলাদার, পরিচালক মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নেওয়াজ, শামিমা নেওয়াজ, মোরশেদুল আলম চাকলাদার, নাহিদ বানু, স্বতন্ত্র পরিচালক মীর সাজেদ উল বাসার এবং স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম শামসুল আরেফিন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদ আলম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির আনাম, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, মো. মনিরুল আলম (কোম্পানি সচিব) ও মো. হাবিবুর রহমান এবং বোর্ড ডিভিশনের এসএভিপি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এনসিসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সভায় ব্যাংকের চলমান ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও কৌশলগত পরিকল্পনা–সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ১৭৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ২৭৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকটির মুনাফা কমেছে ১০২ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকটি মুনাফা করে ৫৮ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মুনাফা ২০১ কোটি টাকা।