নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় রংপুরে আরেক নেতার পদত্যাগ
Published: 26th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির আরও এক সংগঠক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে ওই নেতা সংগঠনের ভেতরে চাঁদাবাজি, দালালদের দাপট ও অপকর্মের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো ব্যবস্থা না নেওয়াসহ তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
পদত্যাগ করা ওই নেতার নাম তৌফিক আহমেদ। তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা কমিটির সংগঠক ছিলেন। গতকাল রোববার রাতে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তৌফিক। আজ সোমবার সকালে পদত্যাগের ঘোষণার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
তৌফিক আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বৈছাআর (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) নিয়ম অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে সদস্যপদ গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু এরপরও কিছু রাজনৈতিক দলের গোপন কর্মী; আওয়ামীপন্থী গুপ্তচর ও সাবেক গণ অধিকার পরিষদের সিন্ডিকেট রংপুরের কমিটি দখল করে নেয়। এইভাবে সাধারণ ছাত্র–জনতার আন্দোলন একটি পকেট কমিটিতে রূপান্তরিত হয়।’
তৌফিক তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, সংগঠনের অভ্যন্তরে চাঁদাবাজ, দালালদের দাপট ও অপকর্মের বিরুদ্ধে শুরু থেকে কেন্দ্রীয় কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চরম নজরদারিহীনতাকে দায়ী করেন।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তৌফিক লিখেছেন, ‘যাঁরা আন্দোলনের রক্ত দিয়ে কেনা ব্যানারকে মামলা–বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারি অফিসে দালালি ও ক্ষমতা দখলের সিঁড়ি বানিয়েছে, তাঁদের বিচারও একদিন হবে ইনশা আল্লাহ। যাঁরা শহীদের রক্তকে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে; তাঁদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জুলাই চলবে। আমরা জান দিবো, জুলাই দিবো না।’
তৌফিক আহমদের তোলা অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ দাবি করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, এগুলোর ভিত্তি নেই। সংগঠনের ভেতরে কেউ অভিযোগ তোলেনি। অথচ পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে।
এর আগে ১৮ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ১৬ জন নেতা পদত্যাগ করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী
বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্মে করে তাদের কোন ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। একটি অসত্য সংবাদ রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রিজভী।
কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো যেন কারো কারো অভ্যাসে পরিনণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং সরকারের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আত আতঙ্কমুক্ত নয় বলেও জানান রিজভী।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা