শহীদ জিয়াউর রহমান আত্মপরিচয়ের বাহক হিসেবে অভিহিত করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, “শহীদ জিয়াউর রহমান আমাদের আত্মপরিচয়ের বাহক। তিনি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিচয় আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি এক ক্রান্তিকালে দেশের ক্ষমতা নিয়েছিলেন। ক্ষমতা নিয়েই তিনি মানুষের জীবন উন্নয়নে সবুজবাদ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন।”

বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে জিয়া পরিষদ কর্মকর্তা ইউনিটের আয়োজনে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি ইবি শিক্ষার্থীদের

অভ্যুত্থানবিরোধীদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি

তিনি বলেন, “দেশের উন্নয়নে নিজে মাটি কেটেছেন। বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতে কাজ করেছেন। তিনি মানুষের মনের ও বিবেকের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন রাষ্ট্রসংস্কারক নেতা।”

তিনি আরো বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যে চিন্তায় এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তার সেই চিন্তার বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তার দর্শন ছিল সময়ের আগে চিন্তা করা। এখন দেশের মানুষ উন্নয়নের জন্য যে চিন্তা করছে, তা তিনি অনেক আগেই করেছিলেন।”

উপাচার্য বলেন, “রাজনীতি হবে মানুষের জন্য। মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে যেতে হবে। সেটাই করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আমরা তার আদর্শকে ধারণ করব, দুর্নীতি মুক্ত ও কর্তব্য পরায়ণ হব। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”

অনুষ্ঠানে জিয়া পরিষদ কর্মকর্তা ইউনিটের সভাপতি আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রধান আলোচক হিসেবে জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। 

অন্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রক্টর অধ্যাপক শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক ওয়ালিদ হাসান পিকুল প্রমুখ।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার

দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে।  বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।

এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ