নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাহাপুর ও দিঘিরপাড় এলাকায় এক সময়ে খরস্রোতা খাল ছিল। নৌকাযোগে মানুষ বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করতেন। কিন্তু দু’পাশ বালু ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করায় খালটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। এমন স্থানেই প্রায় কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হচ্ছে দুটি কালভার্ট। এতে সরকারের টাকা গচ্ছা যাবে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সাহাপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, সাহাপুর এলাকায় যেখানে কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে, সেখানে এর প্রয়োজনীয়তা নাই। দু’পাশে বালু ভরাট করে খাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খাল উদ্ধার করে কালভার্ট হলে এলাকাবাসীর উপকারে আসতো।
সোনারগাঁ পৌর এলাকার বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনে দিঘিরপাড় ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাহাপুর এলাকায় কালভার্ট দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার পরও প্রায় কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় লোকজন। এর পরিবর্তে সেখানে সংযোগ সড়ক করা হলে মানুষের কাজে আসতো বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, হাসমত অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালভার্ট দুটি নির্মাণের কাজ করছেন। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিমের ভাষ্য, সড়কের শ্রেণি পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নাই। আগে থাকার কারণে জায়গাটিতে কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। হাসমত অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৯৭ লাখ টাকায় কার্যাদেশ পায়। লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনের কালভার্টের কাজ শেষে হয়েছে। সাহাপুর এলাকায় নির্মাণকাজ চলছে।
স্থানীয় দিঘিরপাড় গ্রামের আবু সাঈদ মিয়ার ভাষ্য, ৯৭ লাখ টাকা খরচ করে কালভার্ট নির্মাণ না করে মাটি ফেলে সড়কের সংযোগ দিলেই হতো। বড় বাজেটে বড় চুরি করতে এখানে কালভার্ট নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, খাল না থাকার বিষয়টি বিবেচনা করেই দুটি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়কের শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ সড়ক ও জনপথ ব ভ গ ন র ম ণ কর প র এল ক এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য তারাবো ৮ নং ওয়ার্ড
মাদকের কালো ছায়ায় অন্ধকার রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড । এখানে প্রায় অর্ধ্বশত মাদকের স্পট রয়েছে। এ সব স্পটকে ঘিরে ছোট-বড় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।
এখানে সহজেই মিলছে মরণ নেশা গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, আইসপিল, টিডিজেসিক ও লুপিজেসিক ইঞ্জেকশনসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য। সচেতন মহল বলছে পর্যাপ্ত নজরদারি ও তদারকির অভাবেই তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডটি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের ‘অভয়ারণ্য’।
বিভিন্ন সমীক্ষালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, ওই এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রন করছে একাধিক সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে রাসেল, শ্রাবন ও রুবেল সিন্ডিকেটই মূলত ওই এলাকার অধিকাংশ মাদক স্পট নিয়ন্ত্রন করছে। এদের মাধ্যমে এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে দু’লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়ে থাকে।
মাদকের বিষাক্ত ছোবলে হাজার হাজার তরুণের জীবন বিপন্ন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। মাঝে মাঝে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাসেল সিন্ডিকেটর প্রধান রাসেলের নিয়ন্ত্রনে নির্বিঘ্নে ৮নং ওয়ার্ডে মাদক স্পট চলছে। এদের মধ্যে তারই আপন ভায়রা তারাবো গ্রামের ইয়াসিনের ছেলে আবদুল্লাহ ও দক্ষিণপাড়ায় রাসেলের আপন বড় ভাই জুয়েল তারাবো ৮ নং ওয়াডে মাদক সাপ্লাই করে থাকে।
তারাবো বাজারে সিএমবির ভিতরে মাদক স্পট চালায় কামাল উদ্দিনের ছেলে জাহেদ আলি, ওয়াকিলের ছেলে ফারুক, মৃত রসিদের ছেলে এরশাদ। তারাবো অপূর্ব ডাইং সামনে রহিম বাদশা পিতা মৃত শুকুর আলী বিপুল পিতা রহম আলী বাদল ওরফে তোতলা বাদল।
তারাবো সিএমবি বালুর মাঠ নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে মাদক স্পট চালায় মতিন সাউথের ছেলে চান্দু, আব্দুর রহমানের ছেলে আবুল, মোশারফের ছেলে শাহিন।
তারাবো বউ বাজারের সামনে স্পট চালায় মৃত লাল মিয়ায় ছেলে রিপন। তারাবো গাবর পাড়ায় স্পট চালায় আনোয়ারের ছেলে নাঈম, বারেকের ছেলে আলামিন ওরফে চাপাটি আলামিন, ফজর আলির রাজু।
নিসান জুট মিলের সামনে স্পট চালায় জাকিরর ছেলে মেহেদি ও ওগাতের ছেলে রবিন। তারাবো সোলতান বাগ নদির পাড়ে স্পট চালায় আলমগীরের বাপি, শামসুলের ছেলে মোবারক ও সেরাজুল। তারাবো নয়া বাড়িতে স্পট চালায় শাহজাহান উদ্দিনের ছেলে মালেক, মৃত মঞ্জুর ছেলে জসিম পাগলা ও হৃদয়ের ছেলে নিরব।
তারাবো রিতার বিটায় স্পট চালায় দিলুর ছেলে রানা ও জসিম পাগলার ছেলে জাহিদ। তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় তোফাজ্জলের ছেলে নুরু ও নুর ইসলামের ছেলে উজ্জল। তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় রতন সরকারের ছেলে দিগন্ত বাবু, ইন্নাত আলীর ছেলে আরিফ।
রাসেল সিন্ডিকেটের প্রত্যেকটি স্পট দেখভাল করে রুবেল ভুইয়া। এছাড়াও রাসেলের আপন বড় ভাই সুলতান বাগ নয়াবাড়ি স্পটটি কন্ট্রোল করে। রাসেলের আপন বিয়াই আনোয়ার এসব স্পটের ইয়াবা ফেনসিডিল গাজা মদ বিয়ার সাপ্লাই করে।
তারাবো দক্ষিণপাড়া থেকে আব্দুলার বাড়িতে রাসেলের বড় ভাই জুয়েল প্রতিদির সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ডেলিভারি দেয়। এছাড়া তারাবো হাটিপাড়া হিন্দু পাড়ার প্রত্যেকদিন জুয়ার স্পট বসায়। এই স্পট থেকে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা বখড়া পায় রুবেল রাসেল শ্রাবণ।
আরও একটি জুয়ার স্পট বসায় তারাবো সি এম বি নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে। সেখান থেকেও প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা বখড়া পায় রাসেল, রুবেল ও শ্রাবণ।
স্থানীয়দের দাবি যদি ৮ নং ওয়ার্ডের এসব মাদক স্পট বন্ধ না করা হলে এ এলাকা বসবাসের অয়োগ্য হয়ে পড়বে। মাদক সেবী আর মাদক ব্যবসায়ীদের বিচরণে সাধারণ মানুষ প্রতিটা মুহুর্তে আতংকে থাকছে। দ্রুত এদের প্রতিহত করতে হবে।
বিশেষ করে অপ্রতিরোধ্য রাসেলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে তারা সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলে। রূপগঞ্জের অনেক এলাকা দুর্গম। এ সব এলাকায় যেতে অনেক সময় লাগে।
এ সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। তবে মাদকের সাথে কোনো আপষ নেই। এদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জে গাঁজাসহ নারী মাদক কারবারি আটক
জামায়াত নেতা আজাহারুল ইসলামের মুক্তি, এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ
বন্দরে লোহা চুরি করে বিক্রি সময় ২ যুবক আটক
বন্দরে বিভিন্ন ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার ৪
তারুণ্যের সমাবেশে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সজিব’র যোগদান
বন্দরে মাটি কেটার অভিযোগে ২ জনকে ৩ লাখ জরিমানা
বন্দরে ঋণের বোঝা সইতে না পেরে কিডনি বিক্রির ঘোষনা নারীর
বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরন, মুক্তিপন দাবি : গ্রেপ্তার ১
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম