পুরো সড়কেই ছোট-বড় গর্ত। ভারী যানবাহনের চাপে সড়কের অনেক অংশ দেবে গেছে। এই সড়কে এখন যানবাহনের চলাচল দুষ্কর। যাও চলে তার গতি কম, তবে যাত্রী ভোগায় বেশি। এভাবেই মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর-দৌলতপুর-থানাবাজার সড়কের অবস্থা বর্ণনা করছিলেন স্থানীয়রা। এ সড়কের কোথাও কোথাও পিচ উঠে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করে। সড়কটির করুণ অবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে তাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। এ অবস্থায় সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে সম্প্রতি উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণ ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। তারা সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহবাজপুর-দৌলতপুর-থানাবাজার সড়কটি বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর থেকে শুরু হয়ে দৌলতপুর বাজার হয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার থানাবাজারে গিয়ে বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এক সময় শাহবাজপুর থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ছিল। বর্তমানে এটি মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে রয়েছে।
দৌলতপুর ব্রিজের কানলী এলাকা থেকে থানাবাজার পর্যন্ত সড়ক সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে রয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে শাহবাজপুর-দৌলতপুর-থানাবাজার সড়কে কোনো ধরনের সংস্কারকাজ হয়নি। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে এলেও কেউ আমলে নিচ্ছে না।
গাড়িচালক কবির আহমদ বলেন, শাহবাজপুর-থানাবাজার সড়কের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সবচেয়ে কষ্ট হয় রোগীদের নিয়ে যাতায়াতের সময়। কয়েক দিন আগে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে গাড়ি গর্তে পড়ে ঝাঁকুনিতে তাঁর সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
অটোরিকশা চালক আবু সাঈদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই সড়ক দিয়ে তারা গাড়ি চালাতে গিয়ে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন। যেখানে আগে সড়ক পার হতে ২০ মিনিট সময় লাগত, এখন প্রায় ঘণ্টাখানেক লাগছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
শিক্ষার্থী ছাইদুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি শুধু একটি যোগাযোগের পথ নয়, এটি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা, শিক্ষা, ব্যবসা ও জরুরি সেবার স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এখন তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক কাওছার হামিদ ছুন্নাহ বলেন, সড়কের বেহাল দশায় মানুষ অতিষ্ঠ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলেই সংস্কারকাজ শুরু হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র থ ন ব জ র সড়ক দ লতপ র অবস থ সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বলিরপোল-নাছিরগঞ্জ সড়কটি অতিবৃষ্টি ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় ২০ হাজার বাসিন্দা চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে। পাশের ক্ষেতের কোমর পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
একই কারণে উপজেলার চরমার্টিন ও চরকালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরমার্টিন গ্রামে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে তারা দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে সাইকেল কাঁধে উঠিয়ে এক শিক্ষার্থীকে সাঁকো পারাপার হতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অটোরিকশা চলকদের ধর্মঘট চলছে, ভোগান্তি
জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক
স্থানীয়রা জানায়, নাছিরগঞ্জ-বলিরপোল সড়কের আশপাশে অন্তত ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। সড়ক ঘেঁষে পূর্বপাশে সরু খাল রয়েছে। প্রবল জোয়ারের সময় সড়কটি ক্ষতির সম্মুখিন হয়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫ হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানির চাপে সড়কটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান জানান, তীব্র জোয়ারের চাপে রবিবার (২৭ জুলাই) ভোরে সড়কটি ভেঙে যায়। পরে ১ ঘন্টার মধ্যে ভাঙনস্থল খালে পরিণত হয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, ‘‘সড়কটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা চেষ্টা কররি, এখানে কালভার্ট নির্মাণের। যেন পানি যাওয়ার ব্যবস্থা হয়।’’
সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/লিটন/বকুল