গাজীপুরের শ্রীপুরে কেয়ারটেকার ও তাঁর স্ত্রীর মুখে চেতনানাশক ছিটিয়ে কোরবানির একটি ষাঁড়সহ পাঁচটি গরু চুরি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত তিনটা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াত খারচালা গ্রামের শরীফবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত গরুর মালিক ইউসুফ আলী প্রধান ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি গরু লালন-পালন ও দেখভালের জন্য কুরবান আলী নামের একজনকে দায়িত্ব দেন। কুরবান আলী তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গোয়ালঘরের পাশে একটি কক্ষে থাকেন। তাঁদের ছেলে হামিদুল ইসলাম বাড়ির মালিক ইউসুফ আলীর অন্য একটি কক্ষে থাকেন।

চুরি হওয়া গরুর মধ্যে দুটি ষাঁড়, একটি গাভি ও দুটি বাছুর ছিল। এর মধ্যে একটি ষাঁড় কোরবানির উদ্দেশ্যে ইউসুফ আলী কাপাসিয়ার আমরাইদ বাজার থেকে ১ লাখ ৬২ হাজার টাকায় কিনেছিলেন। চুরি হওয়া গরুর আনুমানিক মূল্য সাড়ে ছয় লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন তিনি।

কুরবান আলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার রাতে গোয়ালঘর থেকে শব্দ পেয়ে দা হাতে বেরিয়ে আসেন কুরবান আলীর স্ত্রী। বাইরে দুই-তিনজন লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের একজন এসে তাঁর মুখে চেতনানাশক ছিটিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পড়ে যান। পরে কুরবান আলী বাইরে এলে তাঁর মুখেও একইভাবে চেতনানাশক ছিটানো হয়। তিনিও জ্ঞান হারান।

ভোরে ফজরের নামাজের জন্য ওঠেন তাঁদের ছেলে হামিদুল। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন, তাঁর মা–বাবা উঠানে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। এগিয়ে গিয়ে নিশ্চিত হন তাঁরা জ্ঞান হারিয়েছেন। দেখেন, গোয়ালঘরের দরজা খোলা ও ভেতরে গরুগুলো নেই। পরে কুরবান আলী ও তাঁর স্ত্রীকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁদের জ্ঞান ফেরে।

ইউসুফ আলী বলেন, ‘ছয় মাস আগেও আমার গোয়ালঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছিল। বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে কৃষকেরা নিরুৎসাহিত হবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, সে অনুরোধ করছি।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আবদুল বারিক বলেন, ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য় লঘর

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ