যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা এই দাবি জানান। এই মানববন্ধন থেকে অভয়নগর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘর–মন্দিরে হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদ এবং ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবিও জানানো হয়।

এই আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদ সভাপতি হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। মানববন্ধনে তিনি বলেন, অভয়নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভাঙচুর–অত্যাচার সত্ত্বেও বিচার না হওয়ায় মনে হচ্ছে সরকারের কেউ কেউ মৌলবাদীদের আঙুল ধরে আছে।

অভয়নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি ও লুটপাট হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় বলেন, দেশে হিন্দুবিদ্বেষী মনোভাব বেড়েছে। হিন্দু সম্প্রদায় জন্মভূমিতে মর্যাদার সঙ্গে থাকতে পারছে না। সব সময় ভয় ও উৎকণ্ঠা নিয়ে থাকতে হচ্ছে।

সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের অন্যতম প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার অভয়নগর উপজেলায় কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম হত্যার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

অভয়নগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর স্মরণকালের ভয়াবহ হামলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রসেনজিৎ কুমার বলেন, এসব হামলা পরিকল্পিত। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনোবল ভেঙে গেছে। এ সময় তিনি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্য নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।

দেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে ভক্ত সংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় ব্যর্থ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ কান্তি দে, রাজেশ নাহা, সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সাজন কুমার মিস্ত্রী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক দিলিপ বিশ্বাস, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি প্রভাস চন্দ্র রায়, মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ গরণ জ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী

বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে  মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী,  শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি  বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”

তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”

বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড  প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন