অভয়নগরে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা-আগুনে জড়িতদের বিচার দাবি সনাতনী জাগরণ জোটের
Published: 30th, May 2025 GMT
যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা এই দাবি জানান। এই মানববন্ধন থেকে অভয়নগর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, বাড়িঘর–মন্দিরে হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদ এবং ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবিও জানানো হয়।
এই আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদ সভাপতি হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। মানববন্ধনে তিনি বলেন, অভয়নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভাঙচুর–অত্যাচার সত্ত্বেও বিচার না হওয়ায় মনে হচ্ছে সরকারের কেউ কেউ মৌলবাদীদের আঙুল ধরে আছে।
অভয়নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি ও লুটপাট হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় বলেন, দেশে হিন্দুবিদ্বেষী মনোভাব বেড়েছে। হিন্দু সম্প্রদায় জন্মভূমিতে মর্যাদার সঙ্গে থাকতে পারছে না। সব সময় ভয় ও উৎকণ্ঠা নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের অন্যতম প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার অভয়নগর উপজেলায় কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম হত্যার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অভয়নগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর স্মরণকালের ভয়াবহ হামলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রসেনজিৎ কুমার বলেন, এসব হামলা পরিকল্পিত। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মনোবল ভেঙে গেছে। এ সময় তিনি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্য নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।
দেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে ভক্ত সংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় ব্যর্থ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ কান্তি দে, রাজেশ নাহা, সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ আচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সাজন কুমার মিস্ত্রী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক দিলিপ বিশ্বাস, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি প্রভাস চন্দ্র রায়, মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ গরণ জ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫