সামনে কোরবানি ঈদ। আর ঈদকে সামনে রেখে খামারে খামারে চলছে গরু মোটা তাজাকরণ। যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ফুলেরগাতী গ্রামে এমনই এক পারিবারিক খামারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ষাড় ‘ঠাণ্ডা ভোলা’। শুধু ভালো দামের অপেক্ষা।

ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাড়টির ওজন ১৬০০ কেজি বলে জানালেন খামারি প্রসেনজিৎ রায়। তার খামারে বড় ছোট মিলে মোট ৬টি গরু আছে। এর ভিতরে ষাড় দুটি। আর তার একটি হচ্ছে   ‘ঠাণ্ডা ভোলা’। তিনি প্রায় ৪ বছর ধরে ষাড়টির দেখভাল করছেন। এই খামারে এটিই যে সেরা, তা প্রথম দর্শনেই বলবেন যে কেউ। 

লক্ষণ রায়ের ছেলে প্রসেনজিৎ রায়ের এ খামারে এদের খাদ্য তালিকায় রাখা হয়েছে খৈল, ভুষি, খড় ও ভুট্টার গুড়া। মাঝে মধ্যে খাওয়ানো হয় দেশি সবুজ ঘাস। একটু একটু খুদের ভাতও খাওয়ানো হয়। ‘ঠাণ্ডা ভোলা’ প্রতিদিন প্রায় ১৫০০ টাকার খাওয়ার দিতে হয় বলে জানান প্রসেনজিৎ।

আরো পড়ুন:

হাট কাঁপাতে প্রস্তুত সিরাজগঞ্জের বাবু-তুফান

সিরাজগঞ্জে ৩ হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির আশা 

তিনি জানান, ভাল দাম না পাওয়ায় তার চৌকষ ষাড়টি এখনো বিক্রি করতে পারেননি। তবে তার বিশ্বাস ঈদের আগেই তার ষাড়টি বিক্রি হবে। প্রসেনজিত বললেন, ‘‘যারা নিতে ইচ্ছুক বাড়ি এসে গরু দেখে দাম ঠিক করবেন। মতে মিলে গেলেই আমি ষাড়টি বিক্রি করবো।’’

সরেজমিনে দেখা গেল, ষাড়টি দেখার জন্য দূর থেকেও অনেকে আসছেন। 

প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘‘ষাড়টির ভাল দাম পাওয়ার আশায় আমার পরিবারের সবগুলো লোক দিনরাত মিলিয়ে পরিশ্রম করছি। আশা করছি ভাল একটা দামে ষাড়টি বিক্রি করতে পারবো।’’

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ